বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

পোশাক কারখানা খুলছে আজ

আগেই চালু চট্টগ্রামে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও চট্টগ্রাম

দেশের সব পোশাক কারখানা খুলছে আজ। গতকাল রাতে বিজিএমইএ মহাসচিব মো. ফয়জুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নানের (কচি) নেতৃত্বে বিজিএমইএ বোর্ড, বিকেএমইএ নেতৃবৃন্দসহ পোশাক ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক করে। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পোশাক কারখানাগুলোর নিরাপদে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে নির্দেশনা দেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, মো. সিদ্দিকুর রহমান ও সফিউল আলম মহিউদ্দিন।

কারফিউ চলাকালীন সময়ে কারখানার শ্রমিক, মিড লেভেল ব্যবস্থাপনা কর্মী ও ব্যবস্থাপনা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পরিচয়পত্র কারফিউ পাস হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে। এ সময় বিজিএমইএ সভাপতি কারখানা উৎপাদন কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।

চট্টগ্রামে সচল হলো পোশাক কারখানা : আন্দোলন, কারফিউর পর প্রথম বারের মতো চট্টগ্রামের পোশাক কারখানাগুলো (গার্মেন্ট) চালু হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে চট্টগ্রামের অধিকাংশ পোশাক কারখানায় কাজ চলছে। গত কয়েক দিনের জমানো কাজ দ্রুত সেরে ক্রেতাদের পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে একাধিক শিফটেও কাজ করছে অনেক প্রতিষ্ঠান। তবে প্রথম দিনে কারখানাগুলোতে শ্রমিকের উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গার্মেন্ট শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘চলমান সংকটে পোশাক শিল্প অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তৈরি পোশাক পাঠানো যাচ্ছে না। নতুন ক্রয়াদেশ মিলছে না। এই পরিস্থিতিতে কারখানা মালিকরা সরকারের সঙ্গে কথা বলে আজ (গতকাল) থেকে কারখানা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হওয়া খুব দরকার।’ গত সোমবার চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও নগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে বিজিএমইএ নেতারা কারখানাগুলো চালু করতে সরকারের সহযোগিতা চান। এ সময় তারা শ্রমিক ও কারখানাগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, ইন্টারনেট ও ব্যাংক সেবা চালু করাসহ তিন দফা দাবি দেন। এরপর সরকারের একাধিক পক্ষ থেকে মালিকদের নিজ দায়িত্বে কারখানা চালুর অনুমতি দেওয়া হয়।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মালিকদের নিজ দায়িত্বে কারখানা খোলা রাখতে বলেছেন। আজ (গতকাল) অধিকাংশ কারখানায় পুরোদমে কাজ চলছে বলে জানতে পেরেছি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছেন।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে সিইপিজেড, কেইপিজেডসহ চট্টগ্রামের অক্সিজেন, বায়োজিদ, বন্দর, পাহাড়তলী এলাকায় গার্মেন্ট কারখানাগুলোর বিভিন্ন বিভাগ সচল হতে শুরু করে। কিছু কিছু কারখানায় শ্রমিকরা নিজেদের পছন্দের পরিবহনে কারখানায় এসে পৌঁছান। তবে অধিকাংশ কারখানার শ্রমিকদের যাতায়াতের জন্য নিজস্ব অথবা ভাড়াচালিত পরিবহনের ব্যবস্থা করেছে। তবে প্রথম দিন ঠিক কতটি কারখানা চালু হয়েছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রামের স্বনামধন্য গার্মেন্ট শিল্পগ্রুপ ক্লিফটন গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম টুটুল জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে ৭-৮টা কারখানার সবগুলোই গতকাল থেকে চালু হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বাড়তি কোনো নিরাপত্তার বিষয়ে তারা অবগত নন। কারখানাগুলো নিজ দায়িত্বে শ্রমিকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে কারখানা চালু করেছে।

ফোরএইচ গ্রুপের এক কর্মকর্তা জানান, তারা নিজস্ব পরিবহনের মাধ্যমে শ্রমিকদের আনা-নেওয়া করছেন। দুটি শিফটে ভাগ করে কারখানা চালু করেছেন। কোম্পানির সব কারখানায় কাজ শুরু হয়েছে। ভোর ৬টা থেকে বিকাল ৫টা এবং বিকাল সোয়া ৫টা থেকে ভোর সোয়া ৪টা পর্যন্ত দুই শিফটে কারখানায় কাজ চলছে। তবে প্রথম দিনে ১০ শতাংশের মতো শ্রমিক অনুপস্থিত ছিল।

সর্বশেষ খবর