বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
র‌্যাব মহাপরিচালক

নাশকতাকারীদের আইনের আওতায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) ব্যারিস্টার হারুন অর রশীদ বলেছেন, নাশকতাকারী প্রত্যেককে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তারা ছাত্র আন্দোলনকে সহিংসতায় পরিণত করেছিলেন। রীতিমতো ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। আর এর মাত্রা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।

গতকাল রাজধানীর কাওরানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় র‌্যাবের অতিরিক্ত  মহাপরিচালক কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও র‌্যাব-১ অধিনায়ক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার হারুন বলেন, আগাম প্রস্তুতির কারণে আমরা ঠিক সময়ে নাশকতাকারীদের ঠেকাতে পেরেছি। নইলে ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা আরও বেশি হতো। কারণ নাশকতাকারীরা সব সময় সুযোগ খুঁজে। এরই অপব্যবহার করার চেষ্টা করেছিল। তবে এটা ঠিক, আন্দোলন এত দ্রুত সহিংসতায় টার্ন নেবে তা অনেকে কল্পনাও করতে পারেননি। নাশকতাকারীরা পুলিশ ও র‌্যাবকে টার্গেট করেছিল। তাদের হামলায় আমাদের একজন র‌্যাব সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক সদস্য। আমাদের কনস্টেবল অমিত বড়ুয়া মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।

র‌্যাব ডিজি বলেন, নাশকতাকারীরা কৌশল করে কম বয়সি ছেলেমেয়েদের তাদের সামনে বসিয়ে রেখেছিল। এ কারণে আমাদের অভিযানে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। ১৯, ২০ এবং ২১ জুলাই রাতে তাদের কর্মকান্ড মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।

চার নাশকতাকারী গ্রেফতার : কোটা আন্দোলনের নামে নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. তারেক রহমান (৩১), মো. সজল মিয়া (২৪), আল ফয়সাল রকি (২৭) এবং মো. আরিফুল ইসলাম (৩০)। গ্রেফতার তারেক গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম সদস্য সচিব। গত সোমবার দিবাগত রাতের বিভিন্ন সময় র‌্যাব-১ এর একাধিক দল তাদের গ্রেফতার করে বলে জানিয়েছেন লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস। তিনি বলেন, তারেক নাশকতাকারীদের অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। নাশকতার বাস্তবায়ন করার জন্য তার কাছে এমএমএসের মাধ্যমে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে অর্থ এসেছে। অর্থদাতা এমন চারজনের নাম আমরা পেয়েছি। তারেকের নির্দেশনা ও নেতৃত্বে রাজধানীর বিটিভি ভবনসহ, মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশনসহ রামপুরা, বাড্ডা, মিরপুরে বিভিন্ন স্থানে নাশকতা ও অগ্নিসংযোগ করে গ্রেফতার অন্যরা। গ্রেফতার সজল রাজধানীর উত্তরার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ৪র্থ বর্ষে অধ্যয়নরত। তিনি অনলাইনে মধুর ব্যবসা করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২০১৮ সালে গ্রেফতারকৃত তারেকের সঙ্গে তার পরিচয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদে যুক্ত হন এবং মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ২টি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তিনি এক বছর কারাভোগ করেছেন।

গ্রেফতারকৃত ফয়সাল রাজধানীর মহানগর প্রজেক্টের একটি কলেজে ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। পাশাপাশি একটি পার্টটাইম চাকরি করতেন। ২০২১ সালে তিনি সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদে যুক্ত হলে গ্রেফতারকৃত তারেকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ২০২২ সালে তিনি সংগঠনের মহানগর উত্তরের সভাপতি হন।

গ্রেফতারকৃত আরিফুল দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। লালমাটিয়ায় তার মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকান রয়েছে। দুই বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রেফতার তারেকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারেকের নির্দেশনায় তিনি মিরপুর-১০ কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে অংশ নিয়েছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।

সর্বশেষ খবর