বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

আটকে পড়া পর্যটকরা ফিরলেন সেনা পাহারায়

প্রতিদিন ডেস্ক

কুয়াকাটায় আটকে পড়া পর্যটকরা গন্তব্যে পৌঁছলেন সেনা পাহারায়। ৩ হাজার পর্যটক কক্সবাজার ছেড়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায়। এদিকে বাড়ি ফিরতে চান বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও মেসে আটকে পড়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধির পাঠানো খবর-

বরিশাল : কুয়াকাটায় আটকে পড়া দেড় শতাধিক পর্যটককে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল দুপুরে চারটি বাসে সেনা প্রহরায় তাদের নিরাপদ গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার অং চিং মারমা জানান, কুয়াকাটায় আটকে পড়া পর্যটকদের চারটি বাসে করে বরিশালের অংশ পার করে দেওয়া হয়েছে। পর্যটক বহনকারী চারটি বাস বরিশালের লেবুখালী সেতু থেকে তাদের গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যটকরা ঢাকা, সিলেট, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন শহর থেকে গত ১৫ জুলাই থেকে বিভিন্ন সময় কুয়াকাটায় এসেছিলেন।

পর্যটক ব্যবসায়ী মো. মহসিন জানান, গত ১৫ জুলাই কুয়াকাটায় এসেছিলেন। ১৮ জুলাই ফেরার কথা ছিল। কিন্তু কারফিউ জারি হওয়ায় কুয়াকাটায় আটকা পড়েন। ১৭ জুলাই স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকা থেকে এসেছিলেন মো. তানভীর। তিনি জানান, ‘কারফিউতে আটকে পড়ায় মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিলাম। সেনাবাহিনী এসে তাদের উদ্ধার করেছেন।’

বন্ধুদের নিয়ে ঢাকা থেকে আসা শাকিল আহমেদ ও এ বি এম সালেহীন নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছতে পারায় সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

এদিকে বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও মেসে আটকা পড়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যানবাহনে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে চান তারা। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার পর শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আশপাশসহ নগরীর বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও মেসে অবস্থান করছেন।

এক শিক্ষার্থী বলেন, মোবাইল ব্যাংকি বন্ধ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের খাবার দোকান ও হোটেল বন্ধ রয়েছে। খাবারের ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

কক্সবাজার : কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় কক্সবাজার বেড়াতে এসে আটকে পড়া পর্যটকদের বিশেষ পাস দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। গতকাল সকালে ৮০টি বাস ও ব্যক্তিগত যানবাহনে করে প্রায় ৩ হাজার পর্যটক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় কক্সবাজার ছেড়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আতাউল গনি ওসমানী। তিনি জানান, আরও কিছু পর্যটক কক্সবাজার অবস্থান করছেন। গাড়ির সংস্থান হলে তাদেরও গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় শহরের কলাতলী মোড় থেকে বাসগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় ঢাকা আরামবাগ পৌঁছে দেওয়া হবে। এর আগে গত রবি ও সোমবার দুই দিনে ৫ হাজার পর্যটক বিশেষ পাস নিয়েছেন। এ ছাড়া গত তিন দিনে অন্তত ৩ হাজার পর্যটক কক্সবাজার ত্যাগ করেছেন। গত বুধবার থেকে সারা দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে এসে অন্তত ১০ হাজার পর্যটক আটকা পড়েন। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পর্যটকরা ব্যাংকিং সেবা নিতে না পেরে আর্থিক সংকটে পড়েন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বাসগুলোর সামনে পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারা থাকবে। যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সহজেই মোকাবিলা করা যায়। বাকি পর্যটকদেরকেও নিজ নিজ গন্তব্যে ফেরাতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানান, সব হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্ট মালিকদের কক্ষ ভাড়ায় ছাড় দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটা মানবিক বিবেচনায় করা হচ্ছে।

রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন পর্যটকদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি তদারকি করতে আসেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পর্যটকরা কক্সবাজার এসে থাকা-খাওয়াসহ নানাভাবে কষ্টে ছিলেন। এ বিষয়টি অনুধাবন করে পর্যটকদের নিজ গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থা এবং কক্সবাজারের মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর