বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিমানবন্দরে আটকা হাজার যাত্রী

ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক হলেও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে আটকা যাত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিমানবন্দরে আটকা হাজার যাত্রী

দেশজুড়ে কারফিউর প্রভাবে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকা পড়েছে হাজারো যাত্রী। এতে বিমানবন্দরের টার্মিনালগুলোর সামনে অন্যদিনের তুলনায় যাত্রী ও স্বজনদের সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। এদের কেউ বিদেশ থেকে এসে যানবাহন সংকটে যেতে পারছেন না নিজ গ্রামে। আবার যারা দেশের বাইরে যাবেন তাদের প্রায় সবাই নির্ধারিত সময়ের ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা আগেই হাজির হয়েছেন বিমানবন্দরে। তবে চলমান কারফিউয়ের পঞ্চম দিন গতকাল দেশের সর্ববৃহৎ এ শাহজালাল বিমানবন্দরে সবকটি ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক ছিল। এদিকে যাত্রী চাপের সুযোগে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটের এয়ারলাইনসগুলো টিকিটের বাড়তি দাম নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোনো কোনো যাত্রী বলেছেন, দেশের ভিতরে বিভিন্ন গন্তব্যে তাদের কাছ থেকে টিকিটের দাম ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা পর্যন্ত রাখা হয়েছে। জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত শতভাগ টিকিট বিক্রি করেই ফ্লাইট পরিচালনা করেছে বাংলাদেশ বিমান। সংস্থাটি বলছে, দেশের মধ্যে বিভিন্ন গন্তব্যে তাদের ফ্লাইটের টিকিটের দাম ৩ হাজার ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার টাকা। এদিন শাহজালালে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের ২৪৫টি ফ্লাইট ওঠানামা করেছে। তবে দুটি ফ্লাইট বাতিল করেছে এয়ার অ্যারাবিয়া। বাতিল হওয়া ফ্লাইট দুটি ছিল ঢাকা থেকে আবুধাবি ও আবুধাবি থেকে ঢাকা রুটের। শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, গতকালের ফ্লাইটগুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিক রুটের ১৫০টি এবং অভ্যন্তরীণ রুটের ৯৫টি ফ্লাইট। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২২টি, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের ৪১টি, নভোএয়ারের ১৮টি ও এয়ার অ্যাস্ট্রার ১৪টি ফ্লাইট রয়েছে। বিমানবন্দর সূত্র জানায়, সব ফ্লাইট স্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করছে। বিমানবন্দরে ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত থাকায় চেক-ইন, ইমিগ্রেশনসহ প্রতিটি ধাপ পার হতে অতিরিক্ত সময় লাগছে। বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীদের মধ্যে যারা বিমানবন্দরে আটকা পড়ছেন তাদের অন্তত ৫০০ জনকে খাবার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। কাওলায় প্রবাসী রেস্ট হাউস এবং হাজী ক্যাম্পে এদের থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দর ঘুরে দেখা গেছে, বিদেশগামী অধিকাংশ মানুষ ফ্লাইটের নির্ধারিত সময়ের এক দিন আগে বিমানবন্দরে ভিড় করছেন। তাদের সঙ্গে আত্মীয়স্বজনদেরও দেখা গেছে। অনেকে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করে বিমানবন্দর পৌঁছেন। এরপর বিমানবন্দরের আশপাশেই ঘোরাফেরা করে সময় পার করছেন। অনেকে রাস্তায় ঝামেলা হওয়ার ভয়ে একদিন আগেই বিমানবন্দরে এসেছেন। এসে আটকে গেছেন। তারা বিমানবন্দরের টার্মিনালগুলোর সামনে শুয়ে কিংবা বসে আছেন। কারণ বিদেশগামী যাত্রীরা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে বিমানবন্দরকেই নিরাপদ ভাবছেন। তাই কষ্ট হলেও তারা রাতে বিমানবন্দরেই কাটাবেন বলে জানিয়েছেন। এমনই একজন এনামুল। চাঁদপুর থেকে এক দিন আগেই বিমানবন্দরে এসেছেন। বিমানবন্দরের এক নম্বর টার্মিনালের সামনে শুয়ে আছেন। তাকে বিমানবন্দরের প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের কর্মকর্তারা রাতে কোথায় থাকবেন তা জিজ্ঞেস করেন। তখন তিনি জানান, তিনি বিমানবন্দরেই থাকবেন। কারণ রাতে হোটেলে থাকা নিরাপদ মনে করছেন না। এনামুলের মতো অনেকেই বিমানবন্দরে ভিড় করছেন। যাদের ফ্লাইট আজ বৃহস্পতিবার হওয়ার কথা। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে শনিবার থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে কারফিউ জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল ছিল কারফিউয়ের পঞ্চম দিন। এদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়।

সর্বশেষ খবর