রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
মির্জা ফখরুল

ব্লক রেইড দিয়ে গ্রেপ্তার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মধ্যযুগীয় নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে সরকার। বিরোধী দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি এখন কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরও ‘ব্লক রেইড’ দিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের গুম করে কীভাবে নির্যাতন করে দমন করার চেষ্টা করা হয়েছে, তা তাদের শরীরের ক্ষতচিহ্ন দেখলেই অনুধাবন করা যাচ্ছে। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এ অভিযোগ করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ডাকসুর সাবেক ভিপি, গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক নুরুল হক নূরকে রিমান্ড শেষে আদালতে নিয়ে আসার সময় গণমাধ্যমে যে চিত্র এসেছে, তা যে কোনো বিবেকবান মানুষকে আলোড়িত করবে। রিমান্ডে এমনভাবে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে যে তিনি দাঁড়াতেই পারছেন না। কোটা আন্দোলনের অন্যতম তিন সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদারকে হাসপাতাল থেকে গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা তুলে নিয়ে গেছে। সরকারের এ ধরনের কর্মকা  চলমান সংকটকে বাড়িয়ে তুলবে।  তিনি বলেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দ্য মিরর এশিয়ার ঢাকা প্রতিনিধি সাঈদ খানকে ২৫ জুলাই গভীর রাতে তার মগবাজারের বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গ্রেপ্তার করে এবং রাতভর নির্যাতন চালায়। তার পর সাঈদ খানকে মেট্রোরেল পোড়ানোর মামলায় জড়িয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। কয়েকদিন আগে গুলিবিদ্ধ বাংলাদেশ ন্যাপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নয়াব আলীর একটি চোখ অন্ধ হয়ে গেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জহিরউদ্দিন স্বপন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারান্তরিন করা হয়েছে। ফখরুল বলেন, শুক্রবার খায়রুল কবির খোকনের বাসায় তল্লাশি করে তাকে না পেয়ে তার ভায়রা, শ্যালক ও শ্যালকের ছেলেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। গণ অধিকার পরিষদের আবু হানিফকে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও ইউট্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানসহ অসংখ্য মানুষের বাড়ি ডিবি পুলিশ তল্লাশি করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।  বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা আগলে রাখার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে ক্ষমতার মসনদ ধরে রেখেছে। তার মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল, সেনাবাহিনীর ৫৭ জন চৌকস অফিসারকে হত্যার ঘটনা, সাজানো রায় দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দল ও মতের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় সাজা, ৫০ লাখ নেতা-কর্মীর নামে বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দিয়ে হয়রানি এবং খুন-গুম, রিমান্ডের নামে নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকার সৃষ্ট সন্ত্রাসের মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হত্যা-নির্যাতনের পর এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সাজানো মামলা দায়েরের মাধ্যমে বিরোধী মতের নেতাদের হত্যা, গ্রেপ্তার, গুলি করে আদালতে উঠানোর আগেই নির্যাতন করে পঙ্গু করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর