মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
সমন্বয়কদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ

জোর করে নয় স্বেচ্ছায় তারা বিবৃতি দিয়েছে : ডিবিপ্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোটাবিরোধী আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের বিবৃতি জোর করে নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা। গতকাল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ কার্যালয়ে তাদের সঙ্গে দেখা করে স্বজনরা বলেছেন, ‘ওরা ডিবি কার্যালয়ে ভালো আছে। কোনো সমস্যা নেই। তাদের মাধ্যমে জোর করে বিবৃতি দেওয়ার বিষয়টিও গুজব বলে দাবি করেন তারা। নিজেদের সম্মতিতেই তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছে।’ এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, সমন্বয়কদের জোর করা হয়নি। তারা স্বেচ্ছায় তাদের বিবৃতি দিয়েছেন। গতকাল বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ কার্যালয়ে হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়কের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাদের স্বজনরা। বিকাল ৪টার দিকে সমন্বয়কদের সঙ্গে দেখা করতে যান তাদের স্বজনরা। নুসরাত তাবাসসুমের মা পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মেয়ে ডিবি কার্যালয়ে ভালো আছে। আমরা তাদের সঙ্গে দেখা করে এসেছি। আমাদের অনেক আপ্যায়নও করা হয়েছে।’ নাহিদ আলমের মা বলেছেন, তার ছেলে যথেষ্ট ভালো, সুস্থ এবং স্বাভাবিক আছে। যা দেখে এসেছি, তাতে তিনি সন্তুষ্ট। সারজিস আলমের বড় ভাই বলেন, ‘ও ভালো আছে। নিরাপদে আছে। কোনো সমস্যা নাই।’ অনেকটা একই কথা বলেছেন, হাসানাত আব্দুল্লাহ্র বড় ভাই। তিনি বলেছেন, ‘হাসনাত যথেষ্ট ভালো আছে। তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়নি। তাকে অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করেছি। হারুন স্যারের ব্যাপারে অনেক পজিটিভ কথা বলেছে।’ এর আগে গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের গেটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, নিরাপত্তা ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি হেফাজতে নেওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের দ্রুতই ছেড়ে দেওয়া হবে। আন্দোলন বন্ধে রবিবার সমন্বয়করা যে বিবৃতি দিয়েছেন সেটি জোর করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যারা গুজবটি ছড়িয়েছেন তাদের প্রতি অনুরোধ, গুজব ছড়াবেন না। ডিবি একটি আস্থার জায়গা। সেখানে কাউকে আটকে রাখা হয় না। জোর করে বিবৃতি নেওয়া হয় না। তারা অনুভব করেছে সরকার তো সব দাবি মেনেই নিয়েছে। তারা আমাদের কাছে লিখিতভাবে বলেছে। যে কারণে তারা স্বেচ্ছায় বিবৃতি দিয়ে তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তিনি বলেন, আমরাও তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি, ছাত্র ছিলাম। এই ছয় সমন্বয়ক যাদেরকে নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা এখানে এনেছি। তারা আমাদের সঙ্গে আছে। এই সমন্বয়কারীদের ঘিরে অনেক গুজব চলছে। আমরা তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের পরিবার ও সমন্বয়কদের নিরাপত্তাহীনতার কারণে আমরা তাদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসছি। তিনি বলেন, একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে আমরা মনে করি যদি কোনো ব্যক্তি নিরাপত্তাহীনতা বোধ করেন, আমাদের কাছে আসেন তাহলে আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে তাদের দেখভাল করা। সেটাই আমরা করছি। ছয় সমন্বয়ককে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেবেন কি না? পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে তাদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, এটা ঠিক নয়, রবিবার রাতেও পরিবারের লোকজন ডিবিতে এসেছে, দেখা করেছে।

আজও (গতকাল) দেখা করেছে, কথা বলেছে, সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। ওরা যে ভালো আছে সে জন্য ধন্যবাদ দিয়েছে। আপনারা জানেন, এই কোটাবিরোধী আন্দোলনটা করেছিল কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। তাদের ভিতরে ঢুকে জামায়াত-বিএনপি চক্র ধ্বংসাত্মকমূলক কাজ করেছে। পুলিশ সদস্যকে ঝুলিয়ে হত্যা, মানুষ হত্যা করেছে। রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলোতে আগুন লাগিয়েছে। আমরা মনে করি, যদি আবার চক্রান্তকারীরা ঘোলা পানিতে মাছ ধরার চেষ্টা করে তাহলে এই সমন্বয়কদের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হতে পারে। সে জন্য তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের দেখা দরকার।

সর্বশেষ খবর