বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

স্বেচ্ছায় অবসর পেলেন ছাগলকান্ডের মতিউর

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বেচ্ছায় অবসর পেলেন ছাগলকান্ডের মতিউর

নিজের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো প্রকার অবসরোত্তর আর্থিক সুবিধা না নেওয়ার শর্তে স্বেচ্ছা অবসর পেলেন ছাগলকান্ডে আলোচিত-সমালোচিত এনবিআর কর্মকর্তা (কাস্টমস কমিশনার) মো. মতিউর রহমান। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (শুল্ক-১ শাখা) থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব মকিমা বেগম প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন। এর অনুলিপি এনবিআর চেয়ারম্যান, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বরাবরে পাঠানো হয়েছে। এ আদেশ আগামী ২৯ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এতে বলা হয়, মতিউরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী কোনো প্রকার আর্থিক সুবিধা ছাড়াই তিনি অবসরে যাচ্ছেন। এতে আরও বলা হয়, মতিউর রহমান অবসরজনিত আর্থিক সুবিধা অবসরোত্তর ছুটি, ল্যাম্পগ্র্যান্ট এবং পেনশন প্রাপ্য হবেন না। গত কোরবানির ঈদের সময় সাদিক এগ্রো থেকে মতিউরের ছেলে মুশফিকুর রহমান ওরফে ইফাত ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনলে আলোচনায় আসেন কাস্টমস কমিশনার মো. মতিউর রহমান। অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে মতিউর রহমান অস্বীকার করেন যে ইফাত তার ছেলে নয়। যার খবর গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এই নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। মতিউর রহমান ১১তম বিসিএসে কাস্টমস ক্যাডার হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৬ সালে মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে হাওয়া ভবনের সংযোগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। হাওয়া ভবনের যোগসাজশে শত কোটি টাকার মালিক হন মতিউর রহমান। ওই সময় প্রতিহিংসার শিকার কয়েকজন ব্যবসায়ী তার বিরুদ্ধে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। ওয়ান-ইলেভেনের সময় তাকে ওএসডি করা হয়। ২০০৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। পরবর্তীতে তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট হন। তিনি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত তফসিলি ব্যাংকের পরিচালকও ছিলেন। ছাগলকান্ডের পর মতিউর রহমানের নানা অপকর্ম ও দুর্নীতির খবর বেরিয়ে আসে। এতে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। তাকে কাস্টমস কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ব্যাংকটির পরিচালক পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর অন্য এক আদেশের মাধ্যমে তাকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে (আইআরডি) সংযুক্ত করা হয়। এ সময় তার পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ও উঠে আসে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে। ড. মতিউর রহমান দুটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর নাম লাইলা কানিজ, যিনি বর্তমানে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মেয়ে ফারহানা রহমান ইফসিতা কানাডায় বসবাস করেন। সেখানে ইফসিতার বিলাসবহুল জীবনাচরণ সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার ঝড় তুলেছে। শুধু তাই নয় সে সময় মতিউরের ছেলের বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহারের ছবি ও তথ্যও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

সর্বশেষ খবর