চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ১১২ মিলমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করে। তাছাড়া গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ১৪৯ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করে। পক্ষান্তরে গতকাল জোয়ার শুরু হয় ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে এবং ভাটা শুরু হয় সকাল ১০টা ৫১ মিনিটে।
প্রবল বর্ষণ এবং জোয়ার একই সময় হওয়ায় তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম মহানগরের অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল। গত বুধবার রাত থেকে গতকাল দিনভর কখনো থেমে কখনো মুষলধারে বৃষ্টি হয়। ফলে দুর্ভোগে পড়তে হয় মানুষকে। টানা বর্ষণে পাহাড়ধসের শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করেছে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, উত্তর বঙ্গোপসাগর, উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আলী আকবর বলেন, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত আছে। এ কারণে চট্টগ্রামে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। আরও দুই একদিন এমন বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা আছে।জানা যায়, গতকালের টানা বর্ষণে নগরের জিইসি মোড়, প্রবর্তক মোড়, পাঁচলাইশ, চকবাজার, বাকলিয়া, চান্দগাঁও, কাপাসগোলা, শুলকবহর, আগ্রাবাদ, হালিশহর, জিইসি মোড়, হালিশহর, দুই নম্বর গেট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, ফরিদারপাড়া, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, কাতালগঞ্জ, কাপাসগোলা, বাড়ইপাড়া, ডিসি রোড, বাকলিয়া, চকবাজার কাঁচাবাজার, রহমতগঞ্জ, আতুরার ডিপো এলাকার রাস্তাঘাট ও অলিগলি তলিয়ে গেছে। বেশ কিছু নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। সড়কে হাঁটু পানি জমে গেছে। গাড়ি চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জানা যায়, অতিবর্ষণে দেখা দিয়েছে পাহাড়ধসের শঙ্কা। বর্তমানে নগরে ২৬টি পাহাড়ে ৬ হাজার ৫৫৮টি ঝুঁকিপূর্ণ বসতি আছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বসতি আছে আকবরশাহ থানাধীন ১, ২ ও ৩ নম্বর ঝিলসংলগ্ন পাহাড়গুলোতে। পাহাড়ধসের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই পরিবারগুলো সেখানে বসবাস করছে। টানা বর্ষণ হলেই তাদের প্রশাসন আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়।