রবিবার, ৪ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাট্টা শিল্পীরা

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাট্টা শিল্পীরা

রাজধানীর রবীন্দ্রসরোবরে গতকাল উপস্থিত হন শিল্পীরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

অধিকার আদায় ও শিক্ষার্থীদের হত্যায় জড়িত খুনিদের বিচারের দাবিতে উত্তাল রাজপথ। শিক্ষার্থীদের সেই আন্দোলনে সাহস ও প্রেরণা জোগাতে অভিভাবকরাও ছিলেন সোচ্চার। রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সবশ্রণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছিল ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। তবে জনগণের সব আগ্রহের অবসান ঘটিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন তারকা শিল্পীরা। অনেক দেরিতে হলেও তারকা শিল্পীদের অংশগ্রহণ চলমান আন্দোলনে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে সকল প্রকার অধিকার আদায় ও আন্দোলনে নিহত শহীদদের খুনির বিচারের দাবিতে একাট্টা হয়েছেন তারা।

গতকাল রবীন্দ্রসরোবরের বিক্ষোভ ও আন্দোলনে যোগ দেন- ব্যান্ডতারকা মাকসুদুল হক, নজরুল সংগীতশিল্পী সুজিত মোস্তফা, মাইলসের হামিন আহমেদ, সোলসের পার্থ বড়ুয়া, আর্কের হাসান, সুরকার প্রিন্স মাহমুদ, শওকত আলী ইমন, এলিটা করিম, সভ্যতা, সন্ধি, শেখ মনিরুল ইসলাম টিপু, লতিফুল ইসলাম  শিবলী, জলের গানের রাহুল আনন্দ, জিয়াউর রহমান, আশফাকুল বারি রুমন, জুনায়েদ ইভান, সাকিবসহ আর্টসেল, শিরোনামহীন, জলের গান, ওয়ারফেজ, মাইলস, চিরকুট ও অ্যাশেজ ব্যান্ডের অনেক সদস্য।

এ সময় অনেকের হাতে ছিল প্রিন্স মাহমুদের লেখা-সুরে জেমসের কণ্ঠে ‘হতেই পারে আমাদের এই মিলনমেলাই এক ইতিহাস’! এর আগে, বিপ্লবী কিংবদন্তি বব মার্লের ‘গেট আপ স্ট্যান্ড আপ’ গানটির মাধ্যমে শিল্পীদের ডাক দেয় আন্দোলনের কর্মীরা। অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের সঙ্গে শিল্পীরা আছেন জানিয়ে হামিন আহমেদ বলেন, ‘আর যেন একটা গুলিও না চলে, একটা জীবনও যেন না যায়। যাদের ধরপাকড় করা হয়েছে, তাদের যেন অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়া হয়।’ সহিংসতায় নিহত হওয়ার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে হামিন আরও বলেন, ‘যে জীবনগুলো গেছে, তা নিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং বিচার হবে। এই তদন্ত হবে নির্দলীয় কোনো কমিটি দ্বারা, যাতে সুষ্ঠু বিচার হয়। আমাদের কথা বলার অধিকার, বাকস্বাধীনতা আমরা ফেরত চাই।’ এ সময় গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আশা প্রকাশ করেন হামিন। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করব, বাংলাদেশের মানুষ কী চায়, সে অনুযায়ী তারা (সরকার) ব্যবস্থা নেবে।’

শিল্পী হাসান বলেন, নির্বিচারে গুলি করে শিক্ষার্থীদের যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তা ইতিহাসের একটি কালো অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন এই নৃশংস গণহত্যার কথা এ জাতি ভুলবে না। নারকীয় হত্যাযজ্ঞের এই বেদনাবিধুর স্মৃতির ক্ষত আজীবন বয়ে বেড়াতে হবে। আমি সব গণহত্যার বিচার চাই। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সব সময় পাশে থাকার অঙ্গীকার ঘোষণা করছি। আমি বিদেশে ছিলাম। কিন্তু দেশের এই ক্রান্তিকালে বিদেশে ভালো লাগছিল না। তাই চলে এলাম। অধিকার আদায়ের এই আন্দোলনের সব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শিল্পীরা অতীতের মতো ভবিষ্যতেও পাশে থাকবে। এরপর রবীন্দ্রসরোবর থেকে শহীদ মিনারের উদ্দেশে পদযাত্রায় অংশ নেন শিল্পীরা।

এদিকে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে স্মরণকালের গণজাগরণে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন অভিনেত্রী বাঁধন, অভিনেতা ইমতিয়াজ বর্ষণ, গায়ক প্রবার রিপন প্রমুখ। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।

সর্বশেষ খবর