শনিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা
লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য আকরাম হুসাইন

আওয়ামী লীগকে দেখে সতর্ক হবে সরকার

আকতারুজ্জামান

আওয়ামী লীগকে দেখে সতর্ক হবে সরকার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য আকরাম হুসাইন বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকার দেশের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। সরকারের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে মানুষকে যে কোনো সেবা পেতে চাঁদা-ঘুষ দিতে হয়েছে। পুলিশকে শেখ হাসিনার সরকার সর্বোচ্চ পর্যায়ের অপব্যবহার করেছে। আওয়ামী লীগ যেসব ভুল করেছে তা থেকে সতর্ক থাকবে অন্তর্বর্তী এ সরকার।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। আকরাম হুসাইন আরও বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ বাহিনীকে তিনি নিয়ে যাননি। অথচ পুলিশকে এ শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ পর্যায়ের অপব্যবহার করেছেন। পুলিশ-র‌্যাবসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনীকে বড় অপরাধী হিসেবে জনগণের সামনে দাঁড় করিয়েছেন। এ বাহিনীগুলো একপ্রকার ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর ইমেজ ফিরিয়ে আনা বর্তমান সরকারের বড় দায়িত্ব। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার যত অপরাধ করেছে সব অপরাধের বিচার হবে। আইনের মাধ্যমে এসবের যথাযথ বিচার হবে, কারও ওপর কোনো জুলুম করা হবে না।

এ সমন্বয়ক বলেন, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ মেয়াদের শাসনামলে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান-সংস্থায় অনিয়ম, দুর্নীতি জেঁকে বসেছিল। এগুলো দূর করা সময়সাপেক্ষ। যে ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল তা দূর করতে কিছুটা সময় লাগবে। তিনি বলেন, শিক্ষাসহ প্রতিটি ব্যবস্থা এমনভাবে ধ্বংস করা হয়েছে, যা পুনরুদ্ধার করা সময়সাপেক্ষ। তবে এটি নিয়ে আমরা আশাবাদী। গত সরকারের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে মানুষকে যে কোনো সেবা পেতে চাঁদা-ঘুষ দিতে হতো। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে দেখিয়ে দিয়েছে, সেবার মানসিকতা থাকলে সেবা দেওয়া সম্ভব। দেশের মানুষ এখন দেশ গড়তে প্রস্তুত। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অন্তর্বর্তী এ সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন সম্পর্কে আকরাম হুসাইন বলেন, আমরা ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম। কিন্তু সরকার তখন রাগের বশবর্তী হয়ে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের কারণে তখন এটি নিয়ে আমরা কোনো কথা বলতে পারিনি। কোটা বাতিলের বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হলেও সে সিদ্ধান্ত আদালতের মাধ্যমে বাতিল করে সংকট তৈরি করা হয়েছিল। ছাত্রছাত্রীরা ফের কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামে। কিন্তু এ আন্দোলনকে কটাক্ষ করে কথা বলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আন্দোলনে সহিংসতার জন্য ছাত্রলীগকে উসকে দিয়েছেন। এ ছাড়া অন্যরাও ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। একপর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে ছাত্র আন্দোলনের ওপর সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দেন তাঁরা। এতে অনেক ছাত্র-জনতা হতাহতের ঘটনা ঘটে। সারা দেশে তখন আন্দোলন শুরু হয় খুনের বিচার দাবিতে। আন্দোলনের এ পর্যায়ে আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগসহ নয় দফা দাবি করেছিলাম। কিন্তু সরকার এতটাই ফ্যাসিস্ট হয়ে গিয়েছিল যে তারা কোনোভাবেই ছাত্রদের যৌক্তিক দাবিকে পাত্তা দিচ্ছিল না। বরং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নেওয়া সর্বস্তরের মানুষকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছিল। এর পরই সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন শুরু হয়। জনসাধারণের সমর্থনে আমরা স্বৈরাচার সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে সফল হয়েছি।

সর্বশেষ খবর