রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

রোদবৃষ্টিতে সড়কে শিক্ষার্থীরা

দেয়ালে রঙিন স্লোগান, লেখা হচ্ছে নতুন কথা, পরিষ্কার করেছে ধানমন্ডি ৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোদবৃষ্টিতে সড়কে শিক্ষার্থীরা

রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে দিনরাত সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়ে থেকে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছেন। ট্রাফিক পুলিশের অনুপস্থিতিতে গতকালও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় শিক্ষার্থীরা সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করেন। শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ গতকালও শহরের সৌন্দর্য ফেরাতে দেয়ালে দেয়ালে রংতুলির আঁচড়ে বিভিন্ন গ্রাফিতি ফুটিয়ে তোলেন। কেউ কেউ আইল্যান্ডে গাছ লাগান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরটিতেও অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। শিক্ষার্থীদের একটি অংশ সেই বাড়িটির ধ্বংসস্তূপও নিজেরা পরিষ্কার করেছেন।

বিভিন্ন থানায় পুলিশ আবার দায়িত্ব নিতে শুরু করলেও ঢাকার প্রধান সড়কগুলোতে গতকালও ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি। এদিনও শিক্ষার্থীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে সড়কে যান নিয়ন্ত্রণের কাজ করেন। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন এলাকায় দলে দলে নিজ এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণের কাজে অংশ নেন। যদিও তাদের পাশে বিভিন্ন স্থানে আনসার ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের চোখে পড়ে। শিক্ষার্থীরা লাঠি, বাঁশি, ট্রাফিক নির্দেশনার প্ল্যাকার্ড হাতে সড়কে চলাচলকারী যানগুলোকে সুশৃঙ্খলভাবে চালানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছিলেন। বৃষ্টি-রোদে অনেকে ভিজে গিয়ে আবার কেউ কেউ ছাতা হাতেও এ কাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে যাচ্ছিলেন। সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গোটা ঢাকা শহরের দেয়াল ও স্থাপনাজুড়ে তারা যে স্লোগান লিখেছিলেন এরই মধ্যে এর বেশির ভাগ সাদা রঙে মুছে দিয়েছেন। শহরের সৌন্দর্য রক্ষায় তারা এবার দলে দলে ভাগ হয়ে দেয়ালগুলোতে বিভিন্ন গ্রাফিতি, নতুন দিনের নতুন স্লোগান রঙিন রঙে ফুটিয়ে তুলছেন।

মিরপুর ইসিবি চত্বরে আইল্যান্ডের ওপর একদল শিক্ষার্থীকে নতুন করে গাছ লাগাতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের একজন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় এই সড়কে বেশ কিছু গাছ নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য তারা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে নতুন গাছের চারা রোপণ করছেন।

এরই মধ্যে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরটি যা আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল সেটি স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে পরিষ্কার করেন। সরকারের পতনের পর উত্তেজিত জনতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ বাড়িটি পুড়িয়ে দেয়। যে শিক্ষার্থীরা এ বাড়িটি পরিষ্কারে অংশ নেন তাদের একজন নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির একমাত্র সন্তান মাহির সরওয়ার মেঘ। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের স্ট্যাটাসের একটি ভিডিওতে মেঘকে তার বন্ধুদের নিয়ে ৩২ নম্বর বাড়িটির ছাইভস্ম পরিষ্কার করতে দেখা যায়।

সর্বশেষ খবর