শিরোনাম
রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে থাকতে চান এমন তথ্য নেই

বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশের সদ্যপদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান-বাইডেন প্রশাসনের কাছে এ রকম কোনো তথ্য নেই। র‌্যাবের সাত শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে মার্কিন প্রশাসন এখনো ভাবছে না। সেনাবাহিনী  আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নেওয়া সত্ত্বেও বহুস্থানে হামলা, বাড়ি-ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুটতরাজের পর অগ্নিসংযোগ, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণের সংবাদে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রশ্নের জবাবে শুক্রবার সন্ধ্যায় এসব তথ্য দিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইলকিন্স ভেরনিকা। তিনি এ সংবাদদাতাকে জানান, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব নেওয়ায় আমরা তাঁকে অভিনন্দিত করেছি। বাংলাদেশ প্রতিদিন যে তিনটি প্রশ্ন লিখিত আকারে করে তা এখানে জবাবসহ উল্লেখ করা হলো-

প্রশ্ন : ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের র‌্যাব এবং এ সংস্থার শীর্ষ সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। সময়ের পরিক্রমায় যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ বন্ধু নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র কি সে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা ভাবছে?

জবাব : নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় আচরণ পরিবর্তন/সংশোধন এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করার অভিপ্রায়ে। র‌্যাব এবং এর সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি সংস্থাটির আচরণে প্রকৃত অর্থেই যে পরিবর্তন এসেছে তা দেখতে চায়। আমরা নিষেধাজ্ঞাগুলোর কারণ পর্যালোচনা করি না। এ মুহূর্তে বলার মতো আমাদের কাছে আর কিছু নেই।

প্রশ্ন : ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়েছেন। শোনা যাচ্ছে, ভার্জিনিয়ায় বসবাসরত একমাত্র পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাসায় বাকিটা জীবন কাটাতে আগ্রহী সদ্যসাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্র কি শেখ হাসিনাকে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেবে?

জবাব : আমাদের কাছে তাঁর (শেখ হাসিনা) এমন পরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই।

প্রশ্ন : পদত্যাগের পরই শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছেন। তার পরই সেনাপ্রধান সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নেন। এতদ্সত্ত্বেও কদিন ধরেই হত্যা, খুন, লুটতরাজের পর বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। তা অব্যাহত থাকায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিরাও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র কী ভাবছে?

জবাব : বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আমরাও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা অনুধাবন করছি, পর্যাপ্ত পুলিশের উপস্থিতি না থাকায় সামরিক বাহিনী নিরাপত্তা প্রদান করছে। কিন্তু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত সহিংসতা এবং গুরুতরভাবে আক্রমণের সংবাদে আমরা উদ্বিগ্ন। এ অবস্থায় আমরা সব মহলকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকা এবং সৃষ্ট অস্থিরতা/টেনশন কমানোর জন্য আমাদের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছি। আমরা প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের শান্ত থাকার আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছি।

তিন কংগ্রেসওম্যানের আশাবাদ

এদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতা গ্রহণের পর ডেমোক্র্যাটিক পার্টির তিন প্রভাবশালী কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং, আলেকজান্দ্রিয়া-ওকাসিয়ো করটেজ এবং নিদিয়া ভ্যালেস্কুয়েজ ৯ আগস্ট এক যুক্ত বিবৃতিতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পদত্যাগে বাধ্য হয়ে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে যে অস্থিরতা-অচলাবস্থা বিরাজ করছে তার স্থায়ী সমাধান ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গণতন্ত্রে উত্তরণের ক্ষেত্র তৈরিতে ড. ইউনূস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবেন বলে তাঁরা আশা করছেন। কংগ্রেসওম্যানরা বিশেষভাবে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে চলমান আক্রমণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তা অবিলম্বে থামানোর আহ্বানও জানিয়েছেন। তাঁরা উল্লেখ করেছেন, ছাত্রদের কোটা সংস্কারের আন্দোলনের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে হতাহত হয়েছে বহু মানুষ। সেসব মানুষের স্বজনের প্রতিও গভীর সমবেদনা জানাাচ্ছি। নিহতদের এবং আহতদের অনেক স্বজন নিউইয়র্কে বাস করছেন। তারা যদি প্রয়োজন মনে করেন তাহলে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে পারব।

সর্বশেষ খবর