শুক্রবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

চিকিৎসক খুনে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ

কলকাতা প্রতিনিধি

চিকিৎসক খুনে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ

আন্দোলনের নামে একদল উন্মত্ত যুবক বুধবার মধ্যরাতের পর কলকাতার রাধা গোবিন্দ (আরজি) কর সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তাণ্ডব চালিয়েছে। গত ৯ আগস্ট এই হাসপাতালের পোস্ট গ্র্যাজুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের নারী ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুন করার ঘটনার ন্যায়বিচার চেয়ে গোটা রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ চলছেই। এরই মধ্যে নারী নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার মধ্যরাতে কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় মাঝরাতে পথে নামেন প্রতিবাদী নারীরা। সেই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয় ‘রাত দখল’। মোমবাতি হাতে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা।  কিন্তু হঠাৎ করেই ১২টা বাজতেই একদল উন্মত্ত যুবক আন্দোলনের নামে ওই হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালায়। হাসপাতালের ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে ঢুকে জীবনদায়ী ওষুধ, যন্ত্র, জানালা, দরজা, টেবিল, চেয়ার, কলাপসিবল গেট, হসপিটালের বেড ভাঙচুরের পাশাপাশি পুলিশের গাড়ি ও একাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। হাতে লাঠি, ইট, হাতুড়ি, লোহার রড নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে একদল ব্যক্তির বিরুদ্ধে। হাসপাতালের ভিতরে আন্দোলনকারীদের যে ধরনা মঞ্চ ছিল তা-ও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। অনেকেই বলছেন, হামলাকারীরা কেউই ডাক্তার বা আন্দোলনকারী নন, তারা সবাই বহিরাগত। প্রায় এক শ থেকে দেড় শ মানুষ নির্বিচারে ঢুকে এই তান্ডব চালায়। পুলিশ থাকলেও তারাও ছিল কার্যত অসহায়। তান্ডব চলার সময় প্রাণ বাঁচাতে ডাক্তারদের পাশাপাশি আন্দোলনকারীরাও মাথা গোঁজার আশ্রয়ে ছুটছেন। এমনকি সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া গণমাধ্যমের কর্মীরাও আরজি কর হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। এই হামলায় কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার এক শীর্ষ কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলে এই তান্ডব। এক সময় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় সরকারি এই হাসপাতালের একটি অংশ। পরে অবশ্য বিশাল পুলিশ বাহিনীকে এসে তান্ডবকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়। নারী চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার ন্যায়বিচার চেয়ে এই মুহূর্তে উত্তাল গোটা পশ্চিমবঙ্গ। প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়ছে ডাক্তারদের মধ্যে। পথে নেমেছে রাজনৈতিক দলগুলো। হাত মিলিয়েছে সাধারণ মানুষও। ইতোমধ্যেই ইস্তফা দিয়েছেন আরজি করের প্রিন্সিপাল ডা. সন্দীপ ঘোষ। কলকাতা পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার চলে গিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে। দায়িত্ব পেয়ে তারাও তদন্তে নেমে পড়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে, এরই মধ্যে হাসপাতালে এভাবে ভাঙচুরের ঘটনায় কার সুবিধা হলো?

সর্বশেষ খবর