শনিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

আলেম হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে

--- মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

আলেম হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, স্বৈরাচার হাসিনার শাসনামলে আলেমদের ওপর যারা হত্যাকান্ড চালিয়েছিল, প্রতিবাদী আলেমদের মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন করেছে, তাদের অতিসত্বর গ্রেপ্তার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। গণহত্যাকারী ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার হত্যাকান্ড ও জুলুম-নির্যাতনকে যেসব বুদ্ধিজীবী ও অনলাইন এক্টিভিস্ট সমর্থন জুগিয়েছিলেন, তাদেরও প্রমাণসাপেক্ষে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। হেফাজত আমির আরও বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের গণজমায়েতের ওপর নৃশংস গণহত্যা, ২০২১ সালে মোদিবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশি হত্যাযজ্ঞ এবং এ বছরের জুলাইর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। শিগগিরই আমরা চিহ্নিত খুনি ও খুনের নির্দেশদাতাদের বিরুদ্ধে মামলা সম্পন্ন করব ইনশা আল্লাহ।  মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, আমি বিগত ২০১৩ ও ২০২১ সালে হেফাজত নেতা কর্মীসহ নিরীহ, নিরস্ত্র জনগণকে নির্বিচারে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং হেফাজত নেতা-কর্মীদের নামে দায়েরকৃত সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। ২০২১ সালের মার্চের ২৬ ও ২৭ তারিখে বি-বাড়িয়ায় ১৫ জনকে নির্মমভাবে হত্যার মূলনায়ক ওবায়দুল মুক্তাদিরসহ দোষীদের গ্রেফতার করে বিচার করতে হবে। শিক্ষানীতিতে নাস্তিক্যবাদ ও ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো বাদ দিতে হবে। তিনি বলেন, এতটা বছর আমাদের ওপর খুনি হাসিনার সরকার ভয়াবহ রাষ্ট্রীয় নির্যাতন ও দমন-পীড়ন জারি রেখেছিল। আলেমদের মধ্যে ষড়যন্ত্রমূলক বিভক্তি তৈরি করে, বলপূর্বক মাদরাসা বন্ধের হুমকি দিয়ে এবং নানাভাবে আলেমদের সম্মানহানি করে তাদের দমিয়ে রাখার সব রকম চেষ্টাই তারা করেছিল। কিন্তু খুনি ফ্যাসিস্ট জালিমদের শেষ রক্ষা হয়নি। নজিরবিহীন গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাদের পতন ঘটল।  হেফাজত আমির আরও বলেন, আমরা আল্লাহপাকের শোকর আদায় করছি যে, তিনি আমাদের নতুন স্বাধীনতা দান করেছেন এবং খুনিদের বিচারের সুযোগ করে দিয়েছেন। আমরা সব শহীদকে স্মরণপূর্বক তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলাম কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারী সব শহীদের মাগফিরাত কামনা করছে এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও সার্বিক সহযোগিতার জন্য সরকার, হেফাজত নেতা-কর্মী ও আলেম সমাজসহ জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। তিনি বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাই হেফাজতে ইসলামের প্রধান লক্ষ্য। আমি সর্বস্তরের জনগণ, নেতা-কর্মী ও আলেম সমাজকে সর্বোচ্চ ধৈর্য, পরস্পর সহনশীলতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, সারা দেশের হিন্দুদের মন্দির, অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় যাতে আক্রান্ত না হয়, সেজন্য আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। রাষ্ট্র ও জনগণের যে কোনো প্রয়োজনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কাজ করতে সদা প্রস্তুত। প্রয়োজনে তাদের পরামর্শ ও মতামত নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রশাসনের প্রতি হেফাজত আহ্বান জানায়।

সর্বশেষ খবর