মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

আনার হত্যা মামলায় ১২০০ পৃষ্ঠার চার্জশিট বারাসাত আদালতে

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

আনার হত্যা মামলায় ১২০০ পৃষ্ঠার চার্জশিট বারাসাত আদালতে

বাংলাদেশের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলায় চার্জশিট জমা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। শনিবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত আদালতে ১২০০ পৃষ্ঠার ওই চার্জশিট দাখিল করা হয়।

গোয়েন্দা পুলিশ গত ২৩ মে কসাই জিহাদ হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের ৮৭ দিনের মাথায় চার্জশিট দেওয়া হলো।

চার্জশিটে সিআইডির হাতে গ্রেপ্তারকৃত ‘কসাই’ জিহাদ হাওলাদার এবং সিয়াম হোসেনের নাম আছে। তবে কী উদ্দেশ্যে খুন সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। তদন্তকারীদের মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আখতারুজ্জামান শাহিনকে এখনো ধরা সম্ভব হয়নি, তাই হত্যার মোটিভ এখনো অজানা। কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসে গত ১২ মে নিখোঁজ হন আনার। অভিযোগ, পরদিন নিউটাউনের সঞ্জীবা আবাসনে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। আনার খুনের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া দুজনের মধ্যে একজন কসাই জিহাদ হাওলাদার, তাকে গ্রেপ্তার করা হয় গত ২৩ মে। অন্যজন সিয়াম হোসেন, তাকে গ্রেপ্তার করা হয় গত ৭ জুন। আদালতের নির্দেশে জিহাদ রয়েছে দমদম কেন্দ্রীয় কারাগারে। অন্যদিকে সিআইডি হেফাজতে রয়েছে সিয়াম।

অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশে অপহরণ), ৩০২ (অপরাধমূলক নরহত্যা।), ২০১ (তথ্য প্রমাণ লোপাট) এবং ৩৪ (সংঘবদ্ধ ভাবে অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত করা) সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দেওয়া হয়। কসাই জিহাদ ও সিয়ামকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন সময় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙ্গরের কৃষ্ণমাটি এলাকায় বাগজোলা খালে গিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকেই উদ্ধার হয়েছে একাধিক হাড়গোড়। প্রাথমিকভাবে সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এই হাড়গোড় মানুষের। জিজ্ঞাসাবাদে সিয়াম জানিয়েছিল, সে পলাতক আখতারুজ্জামান শাহিনের অধীনে ষাট হাজার টাকা বেতনে কাজ করত। শাহিনের নির্দেশেই সে জিহাদকে কলকাতা এনে রাজারহাটে ভাড়ার ফ্ল্যাটে রেখেছিল। খুনের জন্য ব্যবহৃত অস্ত্র, প্লাস্টিক, টলি ব্যাগ সবকিছুই কিনে এনেছিল নিউমার্কেট এলাকা থেকে। অন্য দুই অভিযুক্ত ফয়সাল সাজি এবং মুস্তাফিজ রহমান মাংস কিমা করার মেশিন কিনে এনেছিল। আজিমকে কল করার পর তার মাংস এবং হাড় আলাদা করা হয় তারপর ছোট ছোট টুকরা এবং কিমা করা হয় ওই মেশিনে। ওই মেশিন এখন কোথায় তা জানে ফয়সাল। এরই মধ্যে গত ২৮ জুন সঞ্জীবা আবাসনের বিইউ-৫৬ ব্লকের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হয় প্রায় চার কেজি মাংস। উদ্ধারকৃত ওই মাংস মানুষের কি না তা পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছিল ‘সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স’ ল্যাবরেটরিতে। প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে ওই মাংস মানুষের। কিন্তু সেই খন্ডবিখন্ড লাশ এমপি আনারের কি না তা জানতে ডিএনএ পরীক্ষা করতে চায় তদন্তকারী কর্মকর্তারা। এলক্ষ্যে এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডোরিন এবং রক্তের সম্পর্ক থাকা অন্য ব্যক্তিদের ডেকে তাদের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলেও জানায় সিআইডি। ডোরিনকে কলকাতায় আসার জন্য সিআইডির তরফ থেকে চিঠিও পাঠানো হয় বলে জানা যায়। কিন্তু গত প্রায় এক মাস ধরে বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির কারণে এখনো পর্যন্ত কলকাতায় আসতে পারেনি ডোরিন।

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর