বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপির পাঁচ দিনের কর্মসূচি

কোনো বিশৃঙ্খলা বিএনপি সহ্য করবে না : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোনো বিশৃঙ্খলা বিএনপি সহ্য করবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন জনগণকে নিজের দায়িত্ব নিয়ে অর্জিত বিজয়কে সুসংহত করতে হবে। কেউ যদি সন্ত্রাস করতে চায়, চাঁদাবাজি বা অন্য কিছু করে বা ক্ষতি করতে চায় সেটা রাজনৈতিক নেতাদের রুখে দিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যারা ভন্ডুল করবে তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে এবং ভন্ডুলকারীদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে। গতকাল বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। এ সময় বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পাঁচ দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

এর আগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি ঠিক করতে নয়াপল্টনে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের যৌথ সভা হয়। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে। আজকে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এজন্য ছাত্র-জনতা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে ধন্যবাদ জানান তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, এখন আমাদের সামনে বড় সংগ্রাম, বড় লড়াই। সেই লড়াইটা হলো এই বিপ্লবের বিজয়কে সুসংহত করা। এই বিজয়কে যদি আমরা সুসংহত করতে না পারি, আবার কিন্তু নব্য ফ্যাসিবাদ এসে হাজির হবে। এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। বিএনপির দীর্ঘ যাত্রাপথে দলটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বর্তমান চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের বিশাল ব্যাপ্তি ও বিস্তারের কথা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

পাঁচ দিনের কর্মসূচি : ৩১ আগস্ট বেলা ২টায় রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশে ও তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা। এতে দলের সিনিয়র নেতারাসহ দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা অংশগ্রহণ করবেন। পয়লা সেপ্টেম্বর সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১১টায় শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিএনপির উদ্যোগে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাসের আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ২ সেপ্টেম্বর বর্ণাঢ্য র‌্যালি, ৩ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী খাল-বিল ও পুকুরে মৎস্য অবমুক্তকরণ এবং ৪ সেপ্টেম্বর সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। অনুরূপভাবে সারা দেশে জেলা ও মহানগরে পয়লা সেপ্টেম্বর র‌্যালি ও ২ সেপ্টেম্বর আলোচনা সভা এবং ৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া দিবস উপলক্ষে দলের বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠন আলোচনা সভা করবে। তবে এগুলো কবে কখন কোথায় হবে তার ভেন্যু ও সময়সূচি ঠিক করে পরে জানানো হবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির বাইরে সব জেলা ইউনিট ও অঙ্গসংগঠনগুলো কর্মসূচি পালন করবে নিজেদের মতো করে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দল ও অঙ্গসংগঠনগুলো পোস্টার ও বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে যৌথ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আবদুস সালাম আজাদ, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জমান মিল্লাত, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং। অঙ্গসংগঠনের মধ্যে ছিলেন- ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তরের সাইফুল আলম নিরব, দক্ষিণের তানভীর আহমেদ রবিন, যুবদলের আবদুল মোনায়েম মুন্না, নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানি, রাজিব আহসান, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, উলামা দলের মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজা, মাওলানা কাজী মোহাম্মদ আবুল হোসেন, জাসাসের হেলাল খান, জাকির হোসেন রোকন, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মজিবুর রহমান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, মঞ্জরুল ইসলাম মঞ্জু, ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ। এ সময় জুলাই-আগস্টের ছাত্র বিক্ষোভ ও সরকার পতনের আন্দোলনে নিহতদের মধ্যে ১৯৮ জন বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সর্বশেষ খবর