ইতিহাস সৃষ্টিকারী প্রথম অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো শিশুর আজ জন্মদিন। সফল পৃথকীকরণের সেই যমজ দুই বোন মণি-মুক্তা শৈশবকে বিদায় জানিয়ে কৈশোরের উচ্ছলতায় মেতেছে। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামে বেড়ে ওঠা মণি-মুক্তা আজ ১৬ বছরে পা দিল। মণি-মুক্তার জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্মগ্রহণকে মানুষ সৃষ্টিকর্তার অভিশাপ হিসেবে অপবাদ দিলেও বর্তমানে পড়াশোনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে মণি-মুক্তার প্রতিভা পাল্টে দিয়েছে এ অঞ্চলের সব মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি। নৃত্য শেখার পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে দুই বোন। স্থানীয় ঝাড়বাড়ি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে তারা। প্রতিদিন বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার বাইসাইকেল চালিয়ে এক সঙ্গে স্কুলে যায় দুই বোন। দেশের চিকিৎসক এ আর খানের সাফল্য বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রাকে সম্ভাবনাময় করে। আর সাফল্যকে কাজে লাগিয়ে দেশে প্রথম অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো শিশুর সফল পৃথকীকরণ করা হয়। এ সাফল্যের সেই ইতিহাস ১৫ বছর আগের ঘটনা। আজ বিকালে নিজ বাড়িতে ঘরোয়া পরিবেশে পালন করা হবে মণি-মুক্তার জন্মদিনের উৎসব। পরিবারের উদ্যোগে আত্মীয়স্বজন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মণি-মুক্তার বন্ধুবান্ধবসহ প্রতিবেশী এবং গণমাধ্যম কর্মীরা জন্মদিন পালন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে জানান মণি-মুক্তার বাবা জয় প্রকাশ পাল। তিনি জানান, মণি-মুক্তা সুস্থ এবং ভালো আছে। লেখাপড়ার প্রতি বেশ মনোযোগী তারা।
জন্মদিনে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে মণি-মুক্তা বলেন, আমরা ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই। সেই লক্ষ্য নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। দেশবাসীর দোয়া এবং সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারব।