রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা
পরিবার পেল মৃত্যু সংবাদ

২০ লাখ টাকায়ও লিবিয়ায় মুক্তি মেলেনি নাঈমের

ফরিদপুর প্রতিনিধি

২০ লাখ টাকায়ও লিবিয়ায় মুক্তি মেলেনি নাঈমের

দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে উন্নত জীবনের আশায় ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন বুনেন ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার শেখ নাঈম (২৫)। কিন্তু সেই স্বপ্ন লিবিয়ায় গিয়ে ফিকে হয়ে যায়। ২৩ আগস্ট পরিবারের কাছে খবর আসে নাঈম আর বেঁচে নেই! এর মাঝে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। শেখ নাঈম ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গারপাড় গ্রামের কৃষক শেখ নূর হোসেনের ছেলে। ঢাকার একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (বিএসসি) শিক্ষার্থী ছিলেন নাঈম। নাঈমের মৃত্যুর খবরে পরিবারের লোকজন শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছেন। নাঈমের মা-বোনের বিলাপে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। নাঈমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একই গ্রামের ইতালি প্রবাসী শেখ মেহেদির ফাঁদে পড়েন নাঈম। তার সঙ্গে ১৪ লাখ টাকা চুক্তিতে গত জানুয়ারি মাসে চলে যান লিবিয়ায়। সেখানে বন্দি হয়ে পড়েন মাফিয়া চক্রের হাতে। শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। একপর্যায়ে ২০ লাখ টাকা পাঠায় পরিবার। কিন্তু মুক্তিপণের টাকা পৌঁছানোর আগেই তাকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে খবর এসেছে। নাঈমের ছোট ভাই শেখ ফাহিম জানান, এ চক্রের হাতে বন্দি হন একই উপজেলার মালিগ্রামের এক যুবক। তিনি ২২ আগস্ট সকালে ওই মাফিয়া চক্রের হাত থেকে মুক্তি পান। এরপরই ফোনকলে তার পরিবারের লোকজনের কাছে জানান, কয়েক মাস আগেই নাঈমকে মেরে ফেলেছে তারা। কোনোভাবেই যেন নাঈমের পরিবার আর কোনো টাকা ওদের না দেয়। এর আগে বন্দি অবস্থায় মাফিয়া চক্রটি নির্যাতনের অডিও, ভিডিও পাঠিয়ে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ হাতিয়ে নেয় বলে জানান নাঈমের বাবা শেখ নূর হোসেন। তিনি বলেন, জমিজমা বিক্রি করে ১৪ লাখ টাকা দিয়ে পাঠিয়েছিলাম। দালাল মেহেদির বাড়ি আমার বাড়ির পাশে হওয়ায় আমাদের বিশ্বাস ছিল। কিন্তু লিবিয়ায় নিয়েই মাফিয়া চক্র নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতনের ভিডিও, অডিও আমাদের কাছে পাঠিয়ে টাকা দাবি করে। আমরা তখন দালাল মেহেদির সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে টালবাহানা করতে থাকে। নূর হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ২০ লাখ টাকা নেওয়ার বেশ কিছুদিন আগেই নাঈমকে মেরে ফেলে লিবিয়ার মাফিয়া চক্র। দালাল মেহেদি সবকিছু জেনেও আমাদের কাছে গোপন করে একের পর এক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই। ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন আল রশিদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে ওই পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। তবে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তাদের আদালতের মাধ্যমে মামলা করতে বলেছি। কারণ, ঘটনাস্থল দেশের বাইরে হওয়ায় আইনগত জটিলতায় যেন পড়তে না হয় তাদের।

সর্বশেষ খবর