রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা
সুজনের মানববন্ধন

গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

হত্যা ও সহিংসতায় জড়িতদের দ্রুততার সঙ্গে বিচারের আওতায় আনা, আন্দোলনে নিহতদের পরিবারগুলোকে সহায়তা করা ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া, আহতদের সুচিকিৎসাসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে নাগরিক সংগঠন সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক। একই সঙ্গে রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের দাবি জানিয়েছেন সুজন নেতৃবৃন্দ। গতকাল রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সুজন আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এসব দাবি জানানো হয়। ঢাকা ছাড়াও সুজন-এর উদ্যোগে একই দাবিতে গতকাল সারা দেশের সব জেলা ও বিভিন্ন উপজেলায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, সহসম্পাদক জাকির হোসেন, নির্বাহী সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ ও অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস প্রমুখ। সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্ল্যানিং এডিটর মন্জুরুল ইসলাম, হেল্প ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি খন্দকার শহীদুল ইসলাম, ওয়াইডব্লিউসিএ প্রতিনিধি পুরবী তালুকদার, সিরাজুল আলম খান ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ফারাহ খান, সুজন-এর ঢাকা জেলা কমিটির স¤পাদক মাহবুল হক, ঢাকা মহানগর কমিটির স¤পাদক জুবাইরুল হক নাহিদ প্রমুখ। মানববন্ধনে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার, সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু আমরা তা থেকে যোজন যোজন দূরে চলে গিয়েছিলাম। নব্বইয়ে তিন জোটের রূপরেখার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের আরেকটি সুযোগ তৈরি হলেও আমরা সেই সুযোগ হারিয়েছি। তাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এখন যে সুযোগ তৈরি হয়েছে তাকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে একই সঙ্গে দুটো কাজ করতে হবে। প্রথমত, বিগত সময়ে যারাই দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন, হত্যা ও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল তাদের বিচার করা। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা। তিনি বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বহুমুখী সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। প্রশাসনের বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা পালিয়ে গেছেন। এটা নজিরবিহীন। এখন দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এর ফলে বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়ি ধসে গেছে, ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। বিত্তবানদের উচিত হবে ঘরবাড়ি নির্মাণে ও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা এবং প্রধান উপদেষ্টার তহবিলেও দান করা। তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় সেনাবাহিনী জনগণের ওপর গুলি না চালিয়ে একটি অভূতপূর্ব কাজ করেছে। এখন বন্যাদুর্গত এলাকায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি আশা করি, ভবিষ্যতে রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারকে সহায়তা করবে। মানববন্ধনে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম, বিকশিত নারী নেটওয়ার্ক, ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, গণস্বাক্ষরতা অভিযান, ওয়াইডব্লিউসিএ, ক্যা¤প বাংলাদেশ, হেল্প বাংলাদেশ, বাংলাদেশ রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, টিএমএসএস, হিউম্যান রাইটস অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ, হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, সিরাজুল আলম খান ফাউন্ডেশন ইত্যাদি সংগঠনের প্রতিনিধিরা সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।

 

সর্বশেষ খবর