মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

ট্রাম্প-কমলার গলার কাঁটা গাজা ইস্যু

প্রতিদিন ডেস্ক

ট্রাম্প-কমলার গলার কাঁটা গাজা ইস্যু

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে, ততই গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিচ্ছে ফিলিস্তিন ও গাজা ইস্যু। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে আরব বংশোদ্ভূত এবং মুসলিম ভোটারের সংখ্যা কম নয়। তারা প্রধান দুই প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কমলা হ্যারিসের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার বিষয়টি দেখছেন এ ইস্যু কেন্দ্র করে। কার বিজয়ে ফিলিস্তিনিদের ভালোমন্দ নির্ভর করবে এবং গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটবে-এ বিষয়গুলোর ওপর চুলচেরা হিসাবনিকাশ করছেন মুসলিম ভোটাররা। এতে দুজনের ভাগ্যই অনেকটা নির্ভর করছে এ ভোটারদের ওপর। সূত্র : এএফপি, রয়টার্স, আলজাজিরা

এদিকে সর্বশেষ পাওয়া জনমত জরিপ অনুযায়ী, ট্রাম্প থেকে খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন কমলা হ্যারিস। ১৮ থেকে ২২ আগস্টের মধ্যে ট্রাম্পের থেকে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে ছিলেন হ্যারিস। কিন্তু ব্যবধান কমিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদিকে মর্নিং কনসাল্ট পোল অনুযায়ী, ১১ হাজার ৫০১ জন ভোটারের ওপর চালানো সমীক্ষা ইঙ্গিত করছে কমলা হ্যারিসের সমর্থনে রয়েছেন। তবে ইস্যুভিত্তিক মনোভাব পরিবর্তন হচ্ছে ভোটারদের। আবার সাভান্তার পোল বলছে, এখনো বহুসংখ্যক ভোটার রিপাবলিকান দলকেই পছন্দ করেন। অর্থনৈতিক এবং অপরাধের মধ্যে ইস্যুগুলোয় রিপাবলিকানদের পাল্লাই ভারী। যুব সম্প্রদায়, মহিলা, কৃষ্ণাঙ্গ ভোটাররা কমলা হ্যারিসের পক্ষে। এ অংশ থেকে প্রায় ৬৫ শতাংশ সমর্থন পাওয়ার সম্ভাবনা বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্টের। সিবিএস/ইউগভ সমীক্ষা অনুযায়ী, শিক্ষিত সাদা চামড়ার বহু মানুষও হ্যারিসের দিকে ঝুঁকছেন। ওয়াশিংটন পোস্ট-এবিসি নিউজ-ইপসোসের জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী আমেরিকার ৪৯ শতাংশ ভোটদাতার প্রেসিডেন্ট পদে পছন্দ বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা। অন্যদিকে, ট্রাম্পের প্রতি ৪৫ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছেন। তবে ওয়াকিবহালরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রধান সুইং স্টেট বা জয়পরাজয়ের অনিশ্চিত অঙ্গরাজ্য মিশিগান। আরব বংশোদ্ভূতদের বড় অংশ বসবাস করেন এ অঙ্গরাজ্যে। এসব ভোটার নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন পরিচালনা ও তাতে বাইডেন প্রশাসনের সহায়তার কারণে এখানকার ডেমোক্র্যাটপন্থি আরব ভোটাররা বাইডেনের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। এরপর নতুন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হয়েছেন কমলা হ্যারিস। তবে তাঁর জয়ের ব্যাপারে মিশিগানের আরব-ডেমোক্র্যাট ভোটাররা বলছেন, জয় পেতে হলে কমলা হ্যারিসকে তাদের মন জয় করতে হবে আগে। আর এর জন্য তাঁকে লড়াই করতে হবে। মিশিগানের ডিয়ারবর্ন শহরে ১ লাখ ১০ হাজার লোকের বসবাস এবং আরব-আমেরিকানদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এ ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্যে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এ শহর। আরব-আমেরিকানরা বলছেন, তাঁরা ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের কথা শুনতে এবং বিকল্প বিবেচনা করতে ইচ্ছুক। যদিও গত বৃহস্পতিবার শিকাগোয় ডেমোক্র্যাটদের জাতীয় সম্মেলনে মনোনয়ন গ্রহণের পর কমলা হ্যারিস গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং ফিলিস্তিনিদের মর্যাদা, নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও আত্মপরিচয় নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দেন। তবে সম্মেলনে ফিলিস্তিনি কাউকে বক্তব্য দিতে না দেওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে ফিলিস্তিনপন্থি ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধিদের মধ্যে। মুসলিম উইমেন ফর হ্যারিস-ওয়ালজ নামে একটি সংগঠন এরই মধ্যে কমলার প্রচারাভিযান থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছে। ডিয়ারবর্নের মেয়র আবদুল্লাহ হাম্মুদ সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এটি একটি বৈশ্বিক শহর, যেখানকার মোট বাসিন্দাদের প্রায় ৫৫ শতাংশ আরব বংশোদ্ভূত। আপনার কাছে গাজা নিছক আলোচনার ইস্যু হতে পারে, কিন্তু আমাদের কাছে তা নয়। সেখানকার অসংখ্য হতাহত আমাদের পরিবারের সদস্য বা বন্ধুবান্ধব।’ প্রসঙ্গত, সাতটি রাজ্যের ওপর মূলত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল নির্ভর করছে। অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলিনা, পেনসেলভানিয়া ও উইসকনসিন। কুক পলিটিক্যাল রিপোর্ট অনুযায়ী, এ রাজ্যগুলোর মধ্যে ছয়টিতেই এগিয়ে কমলা হ্যারিস।

 

 

সর্বশেষ খবর