বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের রিট খারিজ চাইলেন অ্যাটর্নি জেনারেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল চেয়ে করা রিটটি সরাসরি খারিজ চেয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। গতকাল বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহবুবুল উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চে এ-সংক্রান্ত রিটের শুনানিতে তিনি এই আর্জি জানান। পরে এই রিটের শুনানি আগামী ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আদালত। মানবাধিকার সংগঠন সারডা সোসাইটির পক্ষে নির্বাহী পরিচালক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া গত ১৯ আগস্ট রিটটি করেছিলেন। আবেদনের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন।

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা নিয়ে মাঠের রাজনীতি আদালতে টেনে আনা ঠিক না। আর কোনো রাজনৈতিক দল এই রিট নিয়ে আদালতে আসেনি। এই রিটটি যাদের বিরুদ্ধে করা হয়েছে, সেই আওয়ামী লীগকে রিটে পক্ষভুক্ত করা হয়নি এবং কোনো নোটিস দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ বা নিবন্ধন বাতিল করার কোনো উদ্দেশ্য নেই অন্তর্বর্তী সরকারের। সংবিধানে সংগঠন ও রাজনৈতিক দল পরিচালনার যে স্বাধীনতা রয়েছে, এই সরকার সেটিতে বিশ্বাস করে। আর বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের সঙ্গে জড়িতদের অন্যায়-অবিচারের বিচার আইন আদালতের মাধ্যমে হবে। সেটার জন্য কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা সমীচীন নয়। অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, আওয়ামী লীগে অনেক ভালো নেতা-কর্মী আছেন, যারা তাদের আদর্শে বিশ্বাস করেন। তাই তাদের সে বিশ্বাসের দল নিষিদ্ধ করা আদালতের কাজ নয়। ‘বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা, আজ জেগেছে সেই জনতা’- এমন স্লোগানের প্রেক্ষাপটে ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে যে নতুন স্বাধীনতা এসেছে, সেখানে সবার বাকস্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হতে হবে। তাই রাজনৈতিক দল পরিচালনার স্বাধীনতা এ সময় বন্ধ হতে পারে না।

তিনি বলেন, আমরা দেখেছি প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয়েছে। যেটি আমাদের কারোরই কাম্য ছিল না। বিগত কর্তৃত্ববাদী শাসনের সঙ্গে বিচার বিভাগের সমর্থনের ও অবিচারের প্রেক্ষাপটেই এমন ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী হিসেবে বিচার বিভাগে কোনো আক্রমণ হলে সেটি আমাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণেরই বিষয়। তাই কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা নিয়ে মাঠের রাজনীতি আদালতে টেনে আনা ঠিক না। আর কোনো রাজনৈতিক দল এই রিট নিয়ে আদালতে আসেনি।

এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল রিটটি খারিজ চেয়ে হাই কোর্টকে বলেন, এই রিটটি যাদের বিরুদ্ধে করা হয়েছে, সেই আওয়ামী লীগকে রিটে পক্ষভুক্ত করা হয়নি এবং কোনো নোটিস দেওয়া হয়নি। এই রিটের কোনো ‘লোকাস স্ট্যান্ডার্ড’ নেই। এই রিট ‘মেনটেইনেবল’ নয়। তাই রিটকারীকে ‘কস্ট’ করার আবেদন করছি।

একপর্যায়ে রিটকারী আইনজীবী শুনানির জন্য আরও সময় চাইলে আদালত আগামী ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর