সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিলের রিট খারিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও দলটির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে করা রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাই কোর্ট। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেন।

‘সারডা সোসাইটি’ নামে একটি সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া গত ১৯ আগস্ট রিটটি করেছিলেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শুনানি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেদওয়ান আহমেদ রানজিব। ২৭ আগস্ট আদালত রিটের ওপর শুনানি নেন। পরবর্তী শুনানির জন্য ১ সেপ্টেম্বর তারিখ রাখেন আদালত। গতকাল শুনানিতে রিট আবেদনকারী বলেন, আওয়ামী লীগকে পক্ষ না করা ভুল হয়েছে। রিটটি ‘নট প্রেস’ করে নেওয়ার কথা জানান তিনি। শুনানি নিয়ে একপর্যায়ে আদালত বলেন, রিটটি গ্রহণযোগ্য নয়। রিটটি সরাসরি খারিজ করা হলো।

২৭ আগস্ট শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল রিটটি খারিজ চেয়ে বলেন, রিটটি যাদের বিরুদ্ধে করা হয়েছে, সেই আওয়ামী লীগকে রিটে পক্ষভুক্ত করা হয়নি এবং কোনো নোটিস দেওয়া হয়নি। এ রিটের কোনো লোকাস স্ট্যান্ডই নেই (রিট করার এখতিয়ার)। এ রিট মেইনটেনেবল নয়। তাই রিটকারীকে কস্ট (জরিমানা) করার আবেদন করছি। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ বা নিবন্ধন বাতিল করার কোনো উদ্দেশ্য নেই অন্তবর্তীকালীন সরকারের। সংবিধানে সংগঠন ও রাজনৈতিক দল পরিচালনার যে স্বাধীনতা রয়েছে, এ সরকার তাতে বিশ্বাস করে। আর বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের সঙ্গে জড়িতদের অন্যায়-অবিচারের বিচার আইন আদালতের মাধ্যমে হবে। এর জন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা সমীচীন নয়। রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় এবং ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল সেদিনের শুনানিতে বলেন, একটি গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে কর্তৃত্ববাদের অবসানের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব পালন করছে। এই সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে চাইবে কেউ এটি প্রত্যাশা করলে তা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, এই সরকার মনে করে, মানুষের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক দল অন্যতম প্ল্যাটফর্ম।অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানিতে বলেছিলেন, একটি সংগঠনকে বন্ধ করে দিয়ে, হাজার হাজার, লাখ লাখ সমর্থক, আদর্শে যারা বিশ্বাস করেন, তাদের রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুণ করার বিরুদ্ধে এই সরকার। এ ধরনের রিট যদি গ্রহণ করা হয়, তা সংবিধানের মৌলিক চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক ও দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক চেতনার পরিপন্থি হবে। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের জন বিভাগের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, আইন সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়কদের বিবাদী করা হয়। আবেদনে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।

সর্বশেষ খবর