গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সফিপুরে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় এক পোশাক শ্রমিক নিহত এবং আরও চারজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা ও কারখানা শ্রমিকরা ওই ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিক্ষুব্ধরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। নিহত শ্রমিকের নাম শিরিনা খাতুন (৩৫)। তিনি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার জগতালা গ্রামের মৃত আমির আলির মেয়ে। তিনি স্টারলিং ডিজাইন্স কারখানার ফিনিশিং সেকশনে কর্মরত ছিলেন। কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুরের বিশ্বাসপাড়ায় বসবাস করতেন।
পুলিশ, শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুর ২টার দিকে সফিপুর বিশ্বাসপাড়ার স্টারলিংক কারখানার শ্রমিকরা দুপুরের খাবার খেতে বাসায় যাচ্ছিলেন। কারখানার নিরাপত্তাকর্মীরা শ্রমিকদের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক পার করে দিচ্ছিলেন। এ সময় টাঙ্গাইলগামী দ্রুতগতির একটি ট্রাক নিরাপত্তাকর্মীদের সিগন্যাল অমান্য করে সড়ক পারাপারে থাকা শ্রমিকদের ওপর দিয়ে উঠিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই শিরিনা খাতুন নিহত হন। আল আমিন, নীলা খাতুন, আমিনা আক্তার ও আশরাফুল নামে চারজন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক কারখানার শ্রমিক ও জনতা ঘাতক ট্রাকটি আটকিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ট্রাকের আগুন নেভান। এ সময় বিক্ষুব্ধরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে যানচলাচল বন্ধ করে দেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে শান্তি ফেরাতে সেনাবাহিনীকে ডাকা হয়। সেনাবাহিনী এসে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং যানচলাচল পুনরায় স্বাভাবিক হয়। শ্রমিকদের দাবি, মাঝেমধ্যেই ওই স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় শ্রমিকসহ পথচারী নিহত হন। দীর্ঘদিন ধরে এখানে মহাসড়ক পারাপারের জন্য একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবি করে এলেও তা করা হচ্ছে না। তাদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ। তিনি জানান, দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসের পর বিকাল ৪টার দিকে মহাসড়ক থেকে শ্রমিকরা চলে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।