শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা
ঢাকা মহানগর পুলিশ

মূল সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

শৃঙ্খলা আনতে মূল সড়কে রিকশা বা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান। বৃহস্পতিবার রাতে ডিএমপি সদর দপ্তরে ঢাকা মহানগরীতে সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। এদিকে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা ও সেবা প্রদানে সর্বোচ্চ পেশাদারি ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। গতকাল সকালে ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। ট্রাফিক বিভাগের মতবিনিময় সভায় ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান বলেন, ঢাকা শহরে ২ কোটির বেশি মানুষের জন্য ট্রাফিক পুলিশ সদস্য রয়েছেন ৪ হাজার। রাজধানীর ৩৩৯ পয়েন্টে ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন ট্রাফিক বিভাগের প্রতিটি সদস্য। পৃথিবীর কোনো দেশের রাজধানীতেই ম্যানুয়াল ট্রাফিক ব্যবস্থা নেই, শুধু আমাদের দেশেই এ ব্যবস্থায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ম্যানুয়ালি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কষ্টকর। আর সে কাজটাই দিনের পর দিন করে যাচ্ছেন আমাদের ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। তিনি আরও বলেন, যারা দোকানের মালামাল ফুটপাতের ওপর রেখে ফুটপাত ও সড়ক দখল করে অবৈধভাবে ব্যবসা করেন তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। ট্রাফিক পুলিশসহ ক্রাইম বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া আছে ফুটপাত অবৈধভাবে দখলে রাখলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার। ট্রাফিক সদস্যদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাজধানীর সড়কে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও শৃঙ্খলা ফেরাতে অবৈধ এবং আইন অমান্যকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা জোরদারের বিষয়ে ডিএমপিপ্রধান বলেন, ট্রাফিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে জনগণের ভোগান্তি কমাতে কমিউনিটি পুলিশের সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকেন। কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা গতিশীল করলে ট্রাফিক শৃঙ্খলার আরও উন্নয়ন হবে। ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত সবাইকে তৎপর থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। অন্যকে আইন মানানোর আগে নিজেদের আইন মেনে চলতে হবে। সর্বসাধারণের প্রতি উত্তম ব্যবহার ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ করে ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। এদিকে ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগের মতবিনিময় সভায় ডিএমপি কমিশনার বলেন, ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগ ঢাকা মহানগর পুলিশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট। যেসব এলাকায় বিদেশি দূতাবাস রয়েছে এবং কূটনীতিকরা বসবাস করেন, সেসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং কূটনীতিকদের নিরাপত্তা প্রদান করা আপনাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কূটনীতিকদের নিরাপত্তা ও সেবা প্রদানে আপনাদের সর্বোচ্চ পেশাদারির সঙ্গে কাজ করতে হবে। এমন কোনো অপেশাদার আচরণ করা যাবে না যাতে দেশে এবং বিদেশে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়। বিরাজমান পরিস্থিতিতে ডিএমপির প্রত্যেক সদস্য মনোবল বৃদ্ধির মাধ্যমে পেশাদারির সঙ্গে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডিএমপিপ্রধান বলেন, পুলিশ আইন ও বিধি দ্বারা পরিচালিত একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। দায়িত্ব পালনকালে পোশাকে, উপস্থাপনায়, সেবায় এবং দৃঢ়তায় নিজেদের উচ্চতা তুলে ধরতে হবে। দায়িত্ব পালনে কোনো প্রকার অপেশাদার আচরণ ও শিথিলতা প্রদর্শন করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। মানুষের সঙ্গে আচরণে বিনয়ী হতে হবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের সকল পর্যায়ের সদস্যকে নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রেখে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে পুলিশের ওপর জনগণের পূর্ণ আস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, দুঃসময়ে কাক্সিক্ষত সেবা প্রদান করতে হবে, যাতে তারা মনে করে পুলিশ তাদের বন্ধু। মতবিনিময় সভায় সভাপতি ছিলেন ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মাদ নূরে আলম।

বক্তব্যের শুরুতে ডিএমপি কমিশনার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আত্মাহুতি দানকারী সবার রুহের মাগফেরাত কামনা ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। একই সঙ্গে স্মরণ করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রাণ উৎসর্গকারী ও আহত পুলিশ সদস্যদের। এ অভ্যুত্থানে যেসব পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।

সর্বশেষ খবর