শিরোনাম
সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে রাজধানীজুড়ে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মমুখী মানুষ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সাগরে সৃষ্টি হওয়া স্থল নিম্নচাপের কারণে টানা এ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। যা আগামী দু-তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও অতিভারী বর্ষণও হতে পারে। গতকাল সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। জানা গেছে, একটুআধটু বিরতি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই চলছে বৃষ্টিপাত। টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন সড়কে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বেড়েছে যানজট। আবার কয়েক জায়গায় আন্দোলন ও বিক্ষোভের কারণে দীর্ঘসময় ধরে বন্ধ ছিল গাড়ি চলাচল। সবমিলিয়ে দিনভর রাজধানীর মানুষজনকে যানজট আর বৃষ্টির পানিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ঢাকা, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের নদনদীর পানি বাড়তে পারে। এ ছাড়া অন্যান্য স্থানে পানির সমতল কমতে পারে। এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি দেশের উপকূল দিয়ে ঢুকে স্থল নিম্নচাপ হয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে কক্সবাজারের। নিম্নচাপের প্রভাবে ঢাকায় শনিবার থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। গতকালও বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, গতকাল দেশের প্রায় সর্বত্রই বৃষ্টি হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে, ৭৯ মিলিমিটার। যশোরে বৃষ্টি হয়েছে ৭১ মিলিমিটার। রাজধানীতে বেলা ৩টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২৮ মিলিমিটার। এদিকে গত ২০ আগস্ট থেকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টি হয়। এর সঙ্গে ছিল উজানের পাহাড়ি ঢল। এ দুইয়ের প্রভাবে ওসব অঞ্চলের অন্তত ১১ জেলায় বন্যা সৃষ্টি হয়। আক্রান্ত হয় এলাকাগুলোর অর্ধকোটি মানুষ। তিন দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশের সব বিভাগের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এ সময় দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। গতকাল সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা-ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আজ (সোমবার) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। আর সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা (১-৩) ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি পেতে পারে। কাল (মঙ্গলবার) সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। আর সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা (১-২) ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ সময় উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

রাজধানীজুড়ে যানজট, ভোগান্তি চরমে : টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন সড়কে তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বেড়েছে যানজট। গতকাল দুপুরে ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় বন্ধ ছিল সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার যান চলাচল। ফলে ধানমন্ডি, ঝিগাতলা, নিউমার্কেট, নীলক্ষেতসহ আশপাশের পুরো এলাকা স্থবির হয়ে পড়ে। মিরপুর সড়কে তৈরি হয় দীর্ঘ যানজটের। বিকালের আগেই যানচলাচল শুরু হলেও সন্ধ্যার পরেও ছিল যানজট। শাহবাগ থেকে সায়েন্স ল্যাব অভিমুখের (এলিফ্যান্ট রোড) সড়কজুড়েই গাড়ির দীর্ঘ সারি ছিল। অল্প দূরত্বের এই পথ পাড়ি দিতেও দীর্ঘসময় ধরে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। একই অবস্থা আশপাশের সড়কেরও। এ ছাড়া দুপুরের দিকে আন্দোলনের কারণে কিছু সময় বন্ধ ছিল রাজধানীর গুলিস্তান এলাকার গোলাপ শাহ মাজারের উভয় পাশের সড়কের যানচলাচলও। রাজধানীর আরেক প্রান্ত উত্তরা, রাজলক্ষ্মী ও এয়ারপোর্টেও গাড়ির দীর্ঘ সারি এবং যানচলাচলে ছিল ধীরগতি। একই অবস্থা ছিল রাজধানীর বাড্ডা, নতুনবাজার, নর্দা এবং কুড়িল এলাকারও। নতুন বাজার থেকে কুড়িল পর্যন্ত গাড়ি চলেছে ধীরগতিতে এবং যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে।

সর্বশেষ খবর