বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা
ব্যাংক খাত সংস্কার

আইএমএফের সহায়তা চাইল বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের ব্যাংক খাত সংস্কার, অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণ ও কর সংস্কারসহ উদ্বেগের মূল ক্ষেত্রগুলোতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কারিগরি সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

গতকাল সচিবালয়ে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান। একই দিনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছে প্রতিনিধি দলটি। বৈঠকে তারা জানিয়েছে, নিট আন্তর্জাতিক রিজার্ভের (এনআইআর) শর্ত পূরণ করতে না পারলেও বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে সঠিক পথেই রয়েছে। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আইএমএফের কাছ থেকে যে বাড়তি ঋণ নেওয়া হবে, তা সংস্কারের কাজে ব্যবহার করা হবে। এই অর্থ ব্যবহার হবে অর্থ পাচার প্রতিরোধ, ব্যাংক ও রাজস্ব খাতের সংস্কারসহ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নানা সংস্কারে। তবে আইএমএফের কাছে কত ঋণ চাওয়া হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানান তিনি। অন্য দাতা সংস্থাগুলো কী পরিমাণ সহায়তা দেবে- সেটা জানার পর আইএমএফকে সহায়তার অঙ্ক জানানো হবে।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নানান রকম সংস্কার ও পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সম্পদ দরকার। আমরা যতটুকু পারি দেশীয় সম্পদ আহরণ করব; কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিদেশি সহায়তা লাগবে।’ যেসব ক্ষেত্রে বিদেশি সহায়তা লাগবে, তার মধ্যে অন্যতম হলো বাজেট-সহায়তা। তিনি জানান, বৈঠকে সম্পদের ঘাটতি (রিসোর্স গ্যাপ) কতটা আছে- সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নীতি ও মূল উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিদেশি মুদ্রার বাজার ও ব্যাংক খাত সংস্কারে কী করতে হবে, সেটাও জানাবে আইএমএফ। তারা এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা করবে। তিনি আরও বলেন, অক্টোবর মাসে আমরা বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভায় যাব, সেখানে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা হবে।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, নিট আন্তর্জাতিক রিজার্ভের (এনআইআর) শর্ত অনুযায়ী ২৪ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ আছে ১৯.৪৭ বিলিয়ন ডলার। তবে আইএমএফ বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক সঠিক পথে রয়েছে। আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ ব্যয় মেটাতে পারবে ৩ দশমিক ১ মাসের। তিনি আরও জানান, ম্যাক্রো ইকনোমিক স্ট্যাবিলিটি, এক্সচেঞ্জ রেট, ফরেন রিজার্ভ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে আইএমএফ। বাংলাদেশও তার অবস্থান তুলে ধরেছে। এর আগে মুদ্রানীতির আধুনিকায়ন, বর্তমান অবস্থা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেন পরিস্থিতি, এক্সচেঞ্জ রেটসহ বাংলাদেশকে বাড়তি ৩ বিলিয়ন বা ৩০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়া যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের একটি মিশন এই মুহূর্তে ঢাকায় অবস্থান করছে। মিশনটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইএমএফের গবেষণা শাখার উন্নয়ন সামষ্টিক অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ক্রিস পাপার্জিওর। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবেন আইএমএফের কর্মকর্তারা।

সর্বশেষ খবর