রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

বটপাকুড়ে পাখির মেলা

নীলফামারী প্রতিনিধি

বটপাকুড়ে পাখির মেলা

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে সোনাখুলী গ্রামের শত বছর পুরনো বটপাকুড় গাছের ডালে ডালে বাসা বেঁধেছে শামুক খোল পাখি। উপজেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে গ্রামটিকে পাখির অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, একঝাঁক শামুক খোল পাখি বসে আছে বটপাকুড় গাছের মগডালে। দেখে মনে হয় জায়গাটি যেন তাদের অভয়ারণ্য। পাখার ঝাপটা আর কোলাহলে আকাশ-বাতাস যেন মাতিয়ে রাখে পাখিগুলো। সকালে সোনালি রোদ আর গোধূলির মৃদু আলোয় তাদের অপূর্ব সৌন্দর্য ফুটে ওঠে প্রকৃতির কাছে।

শামুক খোল পাখি এলাকার মানুষের কাছে কদমা নামেও পরিচিত। এরা শামুক খেতে খুব ভালোবাসে। শামুক পেলে ঠোঁট দিয়ে শামুকের খোল ভাঙে, তারপর  সেটা ওপরে তুলে আকাশের দিকে মুখ করে গিলে ফেলে। এ জন্য এর নাম শামুক খোল। তবে এরা শুধু শামুকই খায় না খাল-বিলের ছোট ছোট শামুক-ঝিনুক, ছোট মাছ, আর ফসলের মাঠের পোকা-মাকড় খেয়ে জীবন বাঁচায়। নিরাপদ আশ্রয়ে প্রজননও করছে পাখিগুলো। ফলে দিন দিন বাড়ছে পাখির সংখ্যাও।

ঝাঁক বেঁধে শামুক খোলের খাবার শিকার এবং দল বেঁধে উড়া এলাকার প্রকৃতির সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে।

শামুকখোল পাখি দেখতে বকের মতো। তবে অনেক বড়। গায়ের রং ধূসর সাদা। বাসা বাঁধার সময় শরীর একদম সাদা হয়ে যায়। লেজ ও পাখার শেষভাগ কালো রঙের। নীলফামারী সরকারি কলেজের অনার্সের শিক্ষার্থী সারাবান তহুরা বলেন, শামুক খোল পাখি বসবাসের জন্য বেশ পুরাতন লম্বা গাছ এদের প্রথম পছন্দ। তাই প্রাচীন গাছগুলোতে এরা বাসা বাঁধে। তবে পাখিটি অনেকটা দুর্লভ। এক সময় বাংলাদেশের সব জায়গায় শামুক খোল পাখি দেখা গেলেও এখন নেই। আর শামুকের প্রতি আসক্তির কারণেই এখানে শামুক ভাঙ্গা, শামুক খোর, শামুক খোল বা শাম খোল নামে পরিচিতি পেয়েছে। গ্রামের পাখিপ্রেমী হুমায়ুন রশিদ বলেন, সকালের ঘুম ভাঙে পাখির ডাক আর ডানা ঝাপটানো শব্দের মধ্যে দিয়ে। এই পাখিগুলো মাঘ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে আসে কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসে চলে যায়।

নীলফামারী মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম বলেন, শামুক খোল পাখিটি খুবই কম দেখা মেলে। যে কোনো পাখি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষাসহ মানুষের সব ক্ষেত্রে উপকার করে। তাই শুধু শামুক খোলই নয় সবুজ প্রকৃতিতে বিচরণকারী সব পাখিরই অভয়ারণ্য থাকা উচিত।

সর্বশেষ খবর