জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সংশোধন নিয়ে ভোগান্তি কমাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি বলছে, উপজেলা কার্যালয়েই সমাধান পাওয়া যাবে জাতীয় পরিচয়পত্রের বিভিন্ন সমস্যার।
ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেছেন, ‘অনেকে পায়ের আঙুলের ছাপ দিয়েও ভোটার হচ্ছেন। সিস্টেমে ঘাটতি ছিল, আমরা সেগুলো ধীরে ধীরে উন্নত করছি।’ গতকাল নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে অনলাইন বৈঠকের আগে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ইসি জানিয়েছে, এনআইডি সংশোধন নিয়ে এখন ইসির টেবিলে মোট আবেদন রয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৬৭৭টি। এর মধ্যে অনিষ্পন্ন আবেদন ২ লাখ ৯৭ হাজার ৮০৯টি। আর প্রক্রিয়াধীন আবেদন রয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮৬৮টি। ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেছেন, উপজেলা কার্যালয়েই সমাধান পাওয়া যাবে জাতীয় পরিচয়পত্রের বিভিন্ন সমস্যার। একজনের আঙুলের ছাপ অন্যজনের সঙ্গে মিলে গেলে সমাধান পেতে মাঠ পর্যায় থেকে ভুক্তভোগীকে ইসিতে আসতে হয়। এ বিষয়ে ইসির উদ্যোগ জানতে চাইলে সচিব বলেন, এখন থেকে এসব আপডেট করার জন্য আর ঢাকায় আসতে হবে না। উপজেলা কার্যালয়েই সমাধান পাওয়া যাবে।
কানাডা অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হচ্ছে এনআইডি কার্যক্রম : অবশেষে প্রবাসে এনআইডি কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। ফলে শিগগিগরই কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার প্রবাসীরা পাবেন এ সেবা। গতকাল ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেন, ‘প্রবাসীদের ভোটার কার্যক্রম সাত দেশে চলমান আছে। যেখানে প্রবাসী আনুপাতিক হারে বেশি সেখানে আস্তে আস্তে চালু করব। শিগগিরই কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় চালু হবে এ সেবা।’ বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি, কুয়েত, কাতার, যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়ায় স্মার্টকার্ড বিতরণ উদ্বোধনও হয়েছে। পরে পর্যায়ক্রমে ওমান, বাহরাইন, জর্ডান, সিঙ্গাপুর, লেবানন, লিবিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মালদ্বীপে এনআইডি কার্যক্রম হাতে নেওয়ার কথা রয়েছে।অনেকে পায়ের আঙুলের ছাপ দিয়েও এনআইডি হাতিয়ে নিচ্ছেন : নির্বাচন কমিশন সচিব শফিউল আজিম বলেছেন, ‘অনেকে পায়ের আঙুলের ছাপ দিয়েও ভোটার হচ্ছেন। সিস্টেমে ঘাটতি ছিল, আমরা সেগুলো ধীরে ধীরে উন্নত করছি।’ ২০১৫ সালে ভোটার হওয়ার পর সম্প্রতি এক ব্যক্তি পুনরায় ভোটার হয়েছেন। এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কর্মকর্তারা ফিঙ্গারপ্রিন্ট ওলটপালটের কথা বলেন। বাঁ হাতের জায়গায় ডান হাত ব্যবহারের কথা বলেন। এ নিয়ে সচিব বলেন, ‘বাঁ হাত-ডান হাতের বিষয় তো পরে, পায়ের আঙুল দিয়েও নাকি অনেকে ভোটার হচ্ছেন। ফিঙ্গারপ্রিন্ট যেখানে নেওয়া হচ্ছে, সে জায়গা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার চেষ্টা করছি। সিস্টেমে যেহেতু ঘাটতি ছিল, এগুলো ধীরে ধীরে আমরা ডেভেলপ করছি। এগুলোই তো সংস্কার।’ যে কর্মকর্তারা এসব করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে-জানতে চাইলে শফিউল আজিম বলেন, ‘আমার লোক যদি ভুল করে থাকেন, তাহলে ব্যক্তির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। যদি কোথাও গাফিলতি হয়, জানাবেন।’ রোহিঙ্গা ভোটার ঠেকাতে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া ঠেকাতে আমরা কর্মকর্তা নিয়োগ করেছি। তাদের ভোটার করার ক্ষেত্রে যিনি জড়িত থাকবেন, আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। দুদক থেকে অভিযোগ এসেছে, তদন্ত চলছে।’