শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, আশুলিয়ায় গুজব ছড়িয়ে সহিংসতা করা হয়েছে। গার্মেন্টস কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে কাজ করে যাচ্ছিল। কিন্তু প্রথম থেকেই দেখে এসেছি, সুনির্দিষ্ট কিছু মানুষ উসকানি দিয়ে আসছে।
গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, সোমবার যে ঘটনা ঘটেছে, সেটার মূল ঘটনা সবার জানা দরকার। একজন শ্রমিক সেখানে নিহত হয়েছেন, আমরা দুঃখিত। আমাদের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ১৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া যারা আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপদেষ্টা আসিফ বলেন, একটি গুজবের ভিত্তিতে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল। গুজব ছড়ানো হয়েছিল যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একজনকে রেপ করেছে এবং দুজনকে খুন করে লাশ ফেলে রেখেছে। এভাবে কারখানাগুলো থেকে শ্রমিকদের নামিয়ে আনা হয়েছিল। উপদেষ্টা আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ভাঙচুরসহ তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে শ্রমিকরা। কিন্তু তখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদের মধ্য থেকে অনুপ্রবেশকারী গুলি ছুড়েছিল প্রথম। প্রথম গুলিটি শ্রমিকদের ভিতর থেকে দুষ্কৃতকারীরা ছুড়েছিল। সেখান থেকে গোলাগুলির সূত্রপাত হয়। দুঃখজনকভাবে সেখানে আমাদের একজন শ্রমিক নিহত হন। আরও সাতজন আহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও ১৩ সদস্য আহত হয়েছেন চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, আমরা এই পরিস্থিতি কখনোই চাই না, শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাই না। আশুলিয়ায় এতদিন ধরে আন্দোলন চলছে, সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রেখে এসেছে। মালিকদের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে বেতন আদায় করা যায়, তারা সেই চেষ্টা করছে। সেনাবাহিনীও একই কাজ করেছে। ২৪ সেপ্টেম্বর শ্রমিক-মালিকের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, যদি শ্রমিকদের বেতন না দেওয়া হয়, আমরা মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এ বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। যেসব কোম্পানির মালিক দীর্ঘদিন ধরে বেতন দিচ্ছেন না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশুলিয়ার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দু-তিনটি কারখানায় বেতন না হওয়ার কারণে মঙ্গলবারও শ্রমিকরা বাইপাইলে সড়ক অবরোধ করেছেন। আমরা কারখানার মালিকদের খুঁজছি, কিন্তু তারা পলাতক আছেন। ব্যাংকেও তারা প্রচুর ঋণগ্রস্ত। দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে।