বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০০ টা
সরেজমিন

নীরব এলাকায় কিছুটা কমেছে হর্নের দৌরাত্ম্য

শরিফুল ইসলাম সীমান্ত

নীরব এলাকায় কিছুটা কমেছে হর্নের দৌরাত্ম্য

বিমানবন্দর এলাকায় গতকাল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা সড়কে চালকদের সচেতন করতে প্ল্যাকার্ড ও লিফলেট বিতরণ করেন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা এবং প্রধান সড়কের উত্তরার স্কলাস্টিকা ক্যাম্পাস থেকে লো মেরিডিয়েন হোটেল পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ককে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণার পর কিছুটা কমেছে হর্নের দৌরাত্ম্য। গতকাল সরেজমিনে ওই এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শব্দদূষণ রোধে দিনব্যাপী সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানোয় অন্যান্য দিনের তুলনায় গাড়িচালকরা অপ্রয়োজনে হর্ন বাজানো থেকে বিরত থাকছেন। ফলে পুরোপুরি বন্ধ না হলেও কিছুটা কমেছে শব্দদূষণের মাত্রা।

প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় নিয়মিত এই রোডে যাতায়াত করা কয়েকজন চালকের। তাদের অভিযোগ, এ ৩ কিলোমিটার সড়ক রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এলাকা। ২৪ ঘণ্টাই এ সড়কে প্রচুর গাড়ির চাপ থাকে। ফলে অন্যান্য সড়কের তুলনায় এখানে ট্রাফিক জ্যামও থাকে বেশি। ট্রাফিক জ্যামের সুষ্ঠু ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান না মিললে হর্নমুক্ত এলাকা বানানো অসম্ভব।

তারা আরও বলেন, হর্নমুক্ত  এলাকা বানানোর ক্ষেত্রে আরও একটি বাধা হচ্ছে মোটরসাইকেল। বাইক চালকরাই সবচেয়ে বেশি হর্ন বাজায়। অত্যধিক ট্রাফিকের এই রাস্তায় বেশির ভাগ সময় দ্রুতগতিতে ওভারটেক করতে গিয়ে ঘন ঘন হর্ন বাজানোটা নিত্যদিনের রুটিনে পরিণত করেছেন বাইকাররা। স্কলাস্টিকা ও লো মেরিডিয়েন এই দুই প্রান্তে দেখা মেলে বেসরকারি পরিবেশবাদী যুব সংগঠন ‘গ্রিন ভয়েস’ এর স্বেচ্ছাসেবীদের। সবুজ রঙের টি-শার্ট ও ক্যাপ পরিহিত গ্রিন ভয়েসের স্বেচ্ছাসেবীরা এ দুটি এলাকায় চালাচ্ছেন শব্দদূষণের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। তাদের কারও কারও হাতে ‘হর্ন বাজাবেন না’ লেখা প্ল্যাকার্ড। কেউ কেউ আবার থেমে থাকা গাড়ির ড্রাইভারদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন লিফলেট। লিফলেট থেকে জানা গেল, শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ অনুযায়ী ‘নীরব এলাকা’ তে হর্ন বাজালে কারাদন্ড বা জরিমানা হতে পারে। স্বেচ্ছাসেবীরা জানান, এখনই এই আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হবে না। আপাতত চালকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির কাজ চলছে। স্কলাস্টিকা ক্যাম্পাসের সামনের সড়কে অবস্থানরত গ্রিন ভয়েসের স্বেচ্ছাসেবী মোতাকাব্বির বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা হলেও কমেছে হর্নের দৌরাত্ম্য। নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণার পর আজকেই আমরা প্রথম রাস্তায় নেমেছি। লো মেরিডিয়েনের সামনে আরেক স্বেচ্ছাসেবী উৎস আহসান বলেন, আমাদের এই সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম এক সপ্তাহ ধরে চলবে। এক সপ্তাহের ফলাফল পর্যালোচনা করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের কাছে আমাদের পরবর্তী প্রস্তাবনা তুলে ধরব।

রাজধানীকে শব্দদূষণমুক্ত করতে পুরো ঢাকা শহরকে ১২টি সেক্টরে ভাগ করে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। ১ অক্টোবর হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দুই পাশের তিন কিলোমিটার ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করে এর উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

সর্বশেষ খবর