বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০০ টা
গণসাক্ষরতা অভিযানের তথ্য

ডিগ্রিধারী ৮ লাখ তরুণ চাকরিহীন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে বর্তমানে সার্টিফিকেটধারী মোট বেকারের সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ ৮২ হাজার। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে কর্মহীন আছেন প্রায় ৮ লাখ তরুণ। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গণসাক্ষরতা অভিযান আয়োজিত ‘বৈষম্য দূরীকরণে শিক্ষায় নিরবচ্ছিন্ন রূপান্তর : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর আহমেদ বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে একটি পট পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থা বৈষম্য সৃষ্টির একটা প্রধান হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের এখন লক্ষ্য হতে হবে শিক্ষাব্যবস্থার এ বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করা। বক্তব্যে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, দেশে এখন সার্টিফিকেটধারী মোট বেকারের সংখ্যা ২৫ লাখ ৮২ হাজার। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে কর্মহীন প্রায় ৮ লাখ তরুণ। এ বেকারত্বের হার দেখে বোঝা যায় উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো একদিকে যেমন মৌলিক গবেষণার মাধ্যমে পেটেন্ট বা কপিরাইট তৈরির মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র প্রস্তুত করতে পারছে না, আবার বিদ্যমান বা ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রে যুগের প্রয়োজনে যে ধরনের জ্ঞান ও দক্ষতার চাহিদা তৈরি হচ্ছে, তা বর্তমানে চালু গতানুগতিক বিষয় ও কোর্সগুলো ঠিকমতো পূরণ করতে পারছে না। এ প্রেক্ষিতে উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় দীর্ঘ তাত্ত্বিক আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট কোর্সের পরিবর্তে মডিউলার অ্যাপ্রোচে প্রয়োগমুখী মাইক্রো-ক্রেডেনশিয়াল কোর্স চালু করা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় এ ধরনের কোর্সে পারদর্শিতা অর্জনের জন্য মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষার্থীর বিজ্ঞানসহ সব বিষয়ের ক্ষেত্রে যথাযথ মৌলিক যোগ্যতা অর্জন জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, পাবলিক ও প্রাইভেটের বাইরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোয় উচ্চশিক্ষার প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি হন। এসব কলেজের শিক্ষার মান ও পাঠ্য বিষয়বস্তুর প্রাসঙ্গিকতার ওপর বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে শ্রমবাজারের প্রয়োজন অনুযায়ী দক্ষতাসম্পন্ন স্নাতক তৈরির বিশেষ সুযোগ রয়েছে। তবে ব্যবস্থাপনার দুর্বলতায় সেটি হয়ে উঠছে না।

নবম শ্রেণিতে বিভাগ (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা) বিভাজন না করার সুপারিশও করেছে গণসাক্ষরতা অভিযান। সংস্থাটি বলছে, নবম শ্রেণি থেকে বিশেষায়িত বিভাগ বিভাজন শিক্ষায় ও সমাজে বৈষম্য তৈরি করছে। সংস্থাটি শিক্ষার বৈষম্য দূর করতে শিক্ষা কমিশন করাসহ প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত নানা ধরনের প্রস্তাব দিয়ে বলেছে, শিক্ষাব্যবস্থার পুরো কাঠামোর যুগোপযোগী রূপান্তর ঘটাতে হবে। এ ছাড়া আরও বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এডুকেশন ওয়াচের আহ্বায়ক ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শাহিনুর আল আমিন, লালমাটিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আকমল হোসেন প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর