বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০০ টা

বেতন নিয়ে মনোমালিন্যে জোড়া খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর গুলশানে জোড়া খুনের রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে র‌্যাব। এ ঘটনায় রুমন (২৭) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব জানিয়েছে চায়ের দোকানে অল্প বেতন ও কাজ-কর্ম নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে মালিক রফিকুল ইসলাম সিকদার (৬২) ও কর্মচারী সাব্বিরকে (১৫) খুন করেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে র‌্যাব-১ এবং র‌্যাব-৭-এর যৌথ অভিযানে চট্টগ্রামের হালিশহর থেকে রুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, অল্প বেতন ও দোকানের কাজকর্ম নিয়ে রফিকের সঙ্গে রুমনের বেশ কয়েকবার বাগবিতন্ডা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রুমনের মধ্যে রফিকের প্রতি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। রফিককে উচিত শিক্ষা দিতে দোকানের মূল্যবান মালামাল ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন রুমন। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস। তিনি বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর গুলশান-২ এর একটি চায়ের দোকানের ভিতরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে কোপানো এবং গলা কাটা অবস্থায় দুজনের লাশ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনায় নিহত রফিকুল ইসলামের ছেলে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। রহস্য উদঘাটনে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়।

জানা গেছে, নিহত রফিকুল ইসলাম সিকদারের বাড়ি বরিশালে। তিনি রাজধানীর গুলশান-২ এর রোড নম্বর-১০৮, প্লট নম্বর-২১ এর কেয়ারটেকার হিসেবে চাকরি করার পাশাপাশি প্লটের ভিতরে একটি দোকানে চা-বিস্কুট বিক্রি করতেন। এ ছাড়াও অপর নিহত সাব্বির রফিকের চায়ের দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুরে।

তারা দুজনে প্লটের পেছনের অংশে একটি রুমে ঘুমাতেন। লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জানান, রফিকের চায়ের দোকানে এক মাস ধরে সাব্বির চাকরি করছিলেন। সাব্বির চাকরি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি জানালে রফিক দোকানের জন্য নতুন কর্মচারীর খোঁজ করতে থাকেন। পরবর্তীতে সাত দিন আগে তার পূর্বপরিচিত একজনের মাধ্যমে রফিকের দোকানে কর্মচারী হিসেবে থাকা-খাওয়াসহ প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা বেতনে কাজ শুরু করেন রুমন। তিনি জানান, ওই হত্যাকান্ডের সঙ্গে আরও দুজন জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে রুমন। গত ২৬ সেপ্টেম্বর রফিক, সাব্বির এবং রুমন দোকানের কার্যক্রম শেষে রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে রফিকের মাথায়, গলায় ও শরীরে আঘাত করে রুমন। সাব্বির দেখে ফেললে তাকেও মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর জখম করে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে বিছানার চাদর দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। এরপর রুমন বাসা তল্লাশি করে নগদ টাকা লুট ও কফি মেশিনসহ দোকানের মূল্যবান মালামাল বেশ কয়েকটি বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে রাখেন। পরদিন সকাল ৭টায় একটি পিকআপে দোকানের মালামাল নিয়ে রুমন পালিয়ে যান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিমানবন্দর এলাকায় এসে বাসে করে মালামালসহ তার নিজ বাড়িতে চলে যান। আর লুট করা মালামাল তার আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন রুমন। গ্রেপ্তার এড়াতে কিশোরগঞ্জে তার বোনের বাড়িতে আত্মগোপন করেন। সেখান থেকে পরে চট্টগ্রামে তার আরেক আত্মীয়ের বাসায় চলে যান।

সর্বশেষ খবর