বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০০ টা

স্বামীকে হত্যা করে ৯ টুকরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

পারিবারিক কলহের জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে স্বামীকে হত্যা শেষে ৯ টুকরা করে সেফটিক ট্যাংকিতে লুকিয়ে রাখার চার দিন পর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী  মোমেনা বেগম ও তার মেয়ে লাকীকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল আদালতের মাধ্যমে তাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত শুক্রবার বিকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন ভিকটিম অরুণ মিয়া।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, বাঞ্ছারামপুরের ফরদাবাদ গ্রামের মধ্যপাড়ার অরুণ মিয়ার প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ৩৫ বছর একই গ্রামের মোমেনা বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চরম আকার ধারণ করে। একপর্যায়ে অরুণ মিয়া তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান রুবেলের কাছে ঢাকায় চলে যান। কয়েকদিন আগে বাড়িতে এলে গত শুক্রবার বিকাল থেকে অরুণ মিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সোমবার তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান লুৎফুর রহমান রুবেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রি করেন। এর পরদিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অরুণ মিয়ার পাশের বাড়ির একটি সেফটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ এবং ভিতরে পলিথিনে মোড়ানো কিছু দেখতে পায় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ সেফটিক ট্যাংকের পানি সেচে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় শরীরের ৯ টুকরা অংশ উদ্ধার করে। এটা অরুণ মিয়ার লাশ বলে তার ছেলে শনাক্ত করেন। প্রতিবেশী কুদ্দুস মিয়া বলেন, শুক্রবার অরুণ মিয়া মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করেছেন। তারপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তার স্ত্রী সবাইকে বলেছেন সকালে ঢাকা চলে গেছেন। তখনই সবার মনে সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাশের বাড়ির  সেফটিক ট্যাংকে দুর্গন্ধ পাই। খবর পেয়ে পুলিশ এসে শরীরের বিভিন্ন অংশের ৯ টুকরা পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করে।

অরুণ মিয়ার প্রথম স্ত্রীর সন্তান লুৎফুর রহমান রুবেল জানান, আমার ছোট মা বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন কুমার পাল জানান, পারিবারিক কলহের জেরে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা মাথায় আঘাত করলে অরুণ মিয়ার মৃত্যু হয়। পরে মোমেনা চাপাতি দিয়ে লাশ টুকরা টুকরা করে ৯টি পলিথিনে ভরে পাশের বাড়ির সেফটি ট্যাংকিতে ফেলে দেয়। আমাদের ধারণা মোমেনা ছাড়াও এই হত্যায় আরও কেউ জড়িত থাকতে পারেন। এ ঘটনায় অরুণ মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার মেয়ে লাকিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর