‘সুন্দরবনের বাঘ গণনা’ প্রকল্পের আওতায় প্রথমবারের মতো ক্যামেরা ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে বনের চারটি রেঞ্জেই বাঘ গণনা শেষ হয়েছে। ৮ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে বাঘের সংখ্যা জানানো হবে। এর আগে ২০১৫ ও ২০১৮ সালে বাঘ গণনা হলেও তখন বনের শরণখোলা, সাতক্ষীরা ও খুলনা রেঞ্জে এ কার্যক্রম চলে। এবারই প্রথম চাঁদপাই রেঞ্জকে গণনার আওতায় আনা হয়।
প্রকল্প পরিচালক ও পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, করমজল ও হাড়বাড়িয়া পর্যটন কেন্দ্রে অসংখ্য পর্যটক আসায় চাঁদপাই রেঞ্জের অংশটিকে অনেকেই ‘ডিস্টার্বিং এরিয়া’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। এখানে ক্যামেরা ট্র্যাকিংয়ে বাঘ গণনায় সাফল্য পাওয়া যাবে না বলে এর আগের দুবার এ অংশটিকে বাদ রাখা হয়। কিন্তু বনের চারটি রেঞ্জের একটিকে বাদ রেখে বাঘের প্রকৃত চিত্র পাওয়া সম্ভব নয় মনে করে ঝুঁকি নিয়েই এবার চাঁদপাই রেঞ্জেও বাঘ গণনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ৮ অক্টোবর ঢাকায় বন, পরিবেশ ও জলবায়ুু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আনুষ্ঠানিক সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা জানাবেন।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি প্রথম পর্যায়ে সুন্দরবনের পশ্চিম বিভাগের সাতক্ষীরা ও খুলনা রেঞ্জের ২৯৫ গ্রিটে (স্থান) ও দ্বিতীয় পর্যায়ে চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জে আরও ৩০০ গ্রিটে মোট ১ হাজার ২০০ ক্যামেরা বসিয়ে বাঘের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। এ পদ্ধতিতে ক্যামেরার মাধ্যমে বাঘের মুখম ল ও ডোরা কাটার ছাপ উঠে আসবে। এটা জটিল একটা পরিসংখ্যান কাজ। এর মধ্যে দিয়ে বাঘের সংখ্যা বের করা হবে। জানা যায়, সুন্দরবনে বাঘ জরিপের প্রথমবার কাজ শুরু হয় ২০১৩-১৪ সালে। সে জরিপে ১০৬টি বাঘ সুন্দরবনে আছে বলে জানা যায়। এরপর ২০১৮ সালে জরিপে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ১১৪। এবার গণনায় বাঘের সংখ্যা বাড়বে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়ন বেস্টের প্রধান নির্বাহী পরিচালক মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, সচেতনতার কারণেই বাঘের সংখ্যা বাড়ছে। জানা যায়, এর আগে বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বাঘজরিপ হলেও এ বছর দেশি প্রযুুক্তি ও দেশের অর্থায়নে ক্যামেরা ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে জরিপ চালানো হয়। এ ছাড়া ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঘ রক্ষার জন্য সুন্দরবনে কয়েকটি উঁচু স্থান (ঢিবি) নির্মাণ করা হচ্ছে।