গোপালগঞ্জের কুমার নদে অনুষ্ঠিত হলো বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। কুমার নদের বাহার গ্রাম থেকে শিবগঞ্জী পর্যন্ত ২ কিমি এলাকাজুড়ে এ নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়। মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারী ইউনিয়নের বাহার গ্রামের আসমত স্পোর্টিং ক্লাব গত শনিবার বিকালে এ নৌকাবাইচের আয়োজন করে। গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের প্রতিযোগীরা ১৫টি নৌকা নিয়ে এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। নানা বর্ণে ও বাহারি সাজে সজ্জিত এসব নৌকার মধ্যে ছিল সরেঙ্গা নৌকা, ছিপ নৌকা, কোষা নৌকা, চিলাকাটা নৌকা ও জয়নগর বাচারি নৌকা। বিভিন্ন বয়সের হাজারো মানুষ নদীর দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে, আবার অনেকে নৌকা ও ট্রলারে চড়ে নৌকাবাইচ উপভোগ করেন। প্রতিযোগিতায় মুকসুদপুর উপজেলার বাগাদিয়া গ্রামের দিলীপের নৌকা প্রথম, ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার রামেরচর গ্রামের রেজাউলের নৌকা দ্বিতীয় ও ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদি গ্রামের সামাদের নৌকা তৃতীয় স্থান অধিকার করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আসমত স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি ও বাটিকামারী ইউপি চেয়ারম্যান এবাদত হোসেন মাতুব্বরসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ ছাড়া এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সব নৌকাকে সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতায় স্পন্সর করে মমতাজ হারবাল কোম্পানি। তারা সব প্রতিযোগীর জন্য টি-শার্ট সরবরাহ করে ও কিছু পুরস্কারের ব্যবস্থা করে। প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া মাল্লা আলামিন শেখ বলেন, বাইচের নৌকার মাল্লা হয়ে তালে তালে বৈঠা মেরে নিজে আনন্দ পাই। নদীর দুই কূলে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষকে আনন্দ দিই। তাদের উৎসাহে নৌকাকে দ্রুত সামনের দিকে নিয়ে যাই। এটিই আমাদের পরম পাওয়া। নৌকাবাইচ উপলক্ষে কুমার নদের দুই কূলজুড়ে বসে মুড়ি-মুড়কি, মিষ্টি, কসমেটিকস, কুটির শিল্প ও খেলনাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় তৈজসপত্রের নানান দোকান। গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী, মুকসুদপুর, ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা, আলফাডাঙ্গা, সালথা ও ভাঙ্গা উপজেলার অন্তত ৩০ গ্রামের মানুষ নৌকাবাইচ দেখতে সমবেত হন।