দেশে কয়েক দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে রাজধানীর কাঁচাবাজারে। সপ্তাহখানেক আগেও বাজারে ১৮০-২২০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো। গতকাল খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে মরিচ। অন্যদিকে ধনেপাতা রেকর্ড গড়েছে। প্রতি কেজি ধনেপাতা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। টম্যাটোর দাম ১০০ বেড়ে হয়েছে ২৫০ টাকা। এ অবস্থায় বাজারে সবজিসহ সব নিত্যপণ্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। ফলে অসন্তোষ বিরাজ করছে জনজীবনে। গতকাল রাজধানীর খিলক্ষেত, প্রগতি সরণি, বাড্ডা, রামপুরার বেশ কয়েকটি বাজার সরেজমিন ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। প্রগতি সরণি এলাকার ছোলমাইদ মমতাজ কাঁচাবাজারের এক সবজি ব্যবসায়ী বলেন, কয়েক দিন ধরে বাজারে সবজির দাম বাড়তি। ধনেপাতা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি। দাম বেশি হওয়ায় মানুষ ২৫ গ্রাম, ৫০ গ্রাম, ১০০ গ্রাম করে ধনেপাতা কিনছেন। ধনেপাতার চেহারাও ভালো না। আমদানি কম তাই দাম বেশি। অন্যান্য সবজিও কয়েক দিন ধরে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
রাজধানীর বাজারে অন্যান্য সবজির দামও বেড়েছে। বেশির ভাগ সবজি ৮০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে বরবটি কেনা যেত ৮০-১২০ টাকা কেজি দরে। গতকাল বাজারভেদে প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হয়েছে ১৪০-১৫০ টাকায়। বেগুনের দাম কেজিপ্রতি ৬০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৬০-১৮০ টাকা। বড় করলা ১২০, ছোট করলা ১০০, শসা ৮০, পেঁপে ৪০-৪৫, কাঁকরোল ১০০, দেশি গাজর ১৪০, ঢ্যাঁড়শ ৮০, চিচিঙ্গা ১০০, ঝিঙা ৯০, মুখি কচু ৭০, পটোল ৮০, ধুন্দল ১০০, লম্বা বেগুন ১০০ ও গোলবেগুন ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লেবুর হালি ৪০-৫০, কলার হালি ৫০ টাকা। আলুর ৬০, পিঁয়াজ ১১০-১২০, রসুন ২২০ ও আদা ২৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। গতকাল ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয় ১৮০ টাকায়, পাড়ামহল্লায় এ দাম আরও বেশি। দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২১০ থেকে ২২০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি মুরগির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি গতকাল ২১০-২২০, সোনালি ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা কখনো বন্যার কথা বলেন, কখনো খরার কথা বলেন, কখনো ডলারের কথা বলে বিভিন্ন অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। পণ্যের দাম কিছুটা বাড়তে পারে তবে যেভাবে বাড়ছে এভাবে বাড়তে পারে না। দাম এত বাড়ার পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। আমি মনে করি ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটা সুবিধাবাদী শ্রেণি আছে যারা সুযোগের সন্ধানে থাকে। যখন সুযোগ পায় তখন ভোক্তার পকেট থেকে হাজার কোটি টাকা নিয়ে যায়। বিভিন্ন অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা মনে করি একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। ভোক্তা অধিদপ্তরের সঙ্গে সরকারের অন্যান্য সংস্থা একসঙ্গে কাজ করলে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। যত বেশি তদারকি করবে তত তাড়াতাড়ি মানুষের মাঝে স্বস্তি আসবে বলে মনে করি।’