আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসূচি পালন করেছেন ছাত্রছাত্রীরা। রাজধানীর পলাশীর মোড়ে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ পুনর্নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল বিকালে আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের আয়োজনে এ স্মরণসভা ও পুনর্নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হয়। স্মরণসভায় আবরার ফাহাদের বাবা মো. বরকত উল্লাহ বলেন, ‘আমি আমার ছেলে হত্যার প্রকৃত বিচার চাই।’ আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের জাহিদ আহসানের সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ, জাতীয় নাগরিক কমিটির আখতার হোসেন, আহ্বায়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল কাদের, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, মো. হাসিবুল ইসলাম এবং আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের মোল্লা রহমতুল্লাহ, আসাদ বিন রনি, রাসেল আহমেদ, আহনাফসহ অন্যরা। সভায় আবরার ফাহাদের বাবা মো. বরকত উল্লাহ বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে আমার ছেলেকে অত্যাচার করে হত্যা করা হয়। আমি এখনো আমার ছেলে হত্যার বিচার পাইনি। আমি আমার ছেলে হত্যার প্রকৃত বিচার চাই। আর পলাশীর মোড়ে যে আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ নির্মাণ হবে তা যেন সুষ্ঠুভাবে নির্মাণ করতে পারে এবং এটি রক্ষণাবেক্ষণ হয়, কেউ যেন ভেঙে দিয়ে যেতে না পারে।’
আবরার ফাহাদের ভাই আবরার ফাইয়াজ বলেন, ‘প্রথম যখন ৭ অক্টোবর ২০২০ সালে এ আট স্তম্ভ নির্মাণ করা হয় তা পরদিনই ভেঙে ফেলা হয়। আমি তখন ভাবতাম এ স্তম্ভ আবার নির্মাণ করা হবে কি না। পরিবারের কারও ক্ষতি যেন না হয় সেজন্য তখন আমরা কিছু বলিনি।’ স্মৃতিচারণা করে ফাইয়াজ বলেন, ‘আবরার ভাইয়া যখন পানিচুক্তি ইত্যাদি নিয়ে পোস্ট দিতেন তখন আমি ছাত্রলীগের ভয়ে তাকে মানা করতাম কিন্তু সে বলত-কাউকে না কাউকে তো কথা বলতেই হবে। ভাইয়ার বিশ্বাস ছিল তাঁর রুমমেটরা তাঁকে সাহায্য করবে কিন্তু দেখা গেল তার এক রুমমেটই তার মৃত্যুর কারণ হয়েছে। যে সংগঠন মানুষকে খুনি বানায় তাদের সুষ্ঠু বিচার যেন অন্তর্বর্তী সরকার করে সে দাবি জানাচ্ছি।’ আখতার হোসেন বলেন, ‘আবরার ফাহাদ শুধু একক ব্যক্তি নন, কোটি বাংলাদেশির স্বাধীনতার প্রতীক। আবরার ফাহাদ শাহাদাতের পাঁচটি বছর আজ পূর্ণ হলো। যখন আবরারকে হত্যা করা হয় তার পরই আমরা আন্দোলন করি, সরকার বাধ্য হয়ে খুনিদের গ্রেপ্তার করে কিন্তু এখনো বিচার হয়নি। অবিলম্বে আবরার ফাহাদের সব খুনিকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই। পাশাপাশি ফারদিন হত্যার সঙ্গে জড়িতদেরও আইনের আওতায় যেন নিয়ে আসা হয়।’ ৭ অক্টোবরকে আগ্রাসনবিরোধী দিবস হিসেবে পালনের দাবি জানান তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেন, শহীদ আবরারের জীবনের বিনিময়ে অভ্যুত্থান-পরবর্তীতে একটা নতুন সময় এসেছে। আর যেন কোনো স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে স্থান না পায়। স্মরণসভা শেষে আগ্রাসনবিরোধী আটস্তম্ভ পুনর্নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।