শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০০ টা
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

অবশেষে অটোরিকশা চলাচলের প্রস্তাব

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

গণপরিবহনের পর সাধারণ মানুষ বেশি ব্যবহার করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা। কিন্তু ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি রাখা হয়নি। ফলে প্রকল্পটির সুফল নিয়ে তৈরি হয় প্রশ্ন। তবে জনসাধারণের কথা বিবেচনা করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এলিভেটেড  এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি চেয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেবে সিডিএ। তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে মোটরসাইকেল ও প্রাইমমুভার চলাচল করতে পারবে না। গত বছরের ১৪ নভেম্বর নগরের লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত নির্মিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করা হয়। তবে নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় যান চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়নি।

জানা যায়, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচল করতে ১২ ধরনের গাড়ির  প্রস্তাবিত টোল নির্ধারণ করে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠায় সিডিএ। তালিকায় মোটরসাইকেল (দুই চাকা), সিএনজিচালিত অটোরিকশা (তিন চাকা), কার, জিপ, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মিনিবাস, বাস, ট্রাক (চার চাকা), ট্রাক (ছয় চাকা), কাভার্ড ভ্যান এবং ট্রেইলার গাড়ি চলাচলের সুযোগ রাখা হয়েছিল। কিন্তু গত ১২ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সিডিএর প্রস্তাব পর্যালোচনা করে ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল, ট্রেইলার ও অটোরিকশা চলাচল সমীচীন হবে না’ বলে এ তিন ধরনের গাড়ি বাদ দিয়ে টোলের হার চূড়ান্ত করা হয়। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্ক তৈরি হয়। অনেকে ক্ষোভ ও হতাশাও প্রকাশ করে। জরুরি রোগী পরিবহনে অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচল করতে কার ১০০ টাকা, জিপ ১০০ টাকা, মাইক্রোবাস ১০০ টাকা, মিনিবাস ২০০ টাকা, বাস ৩০০ টাকা, ট্রাক (চার চাকা) ২০০ টাকা ও কাভার্ডভ্যানের জন্য ৫০০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়। সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি চেয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে মিটিংও হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন মিললে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব। তবে অটোরিকশার টোলের হার কত হবে তা এখনো নির্ধারণ হয়নি। এটি বোর্ড সভায় প্রস্তাব, আলোচনা এবং অনুমোদনের পরই মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আশা করি এটি সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।

জানা যায়, নগরের লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ২০১৭ সালে একনেকে ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল তিন বছর। পরে মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধি করে ব্যয় হচ্ছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা, মেয়াদ ধরা হয় ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ‘চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার হতে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ’ শীর্ষক কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। উড়াল সড়কটি বিমানবন্দর এলাকা থেকে শুরু হয়ে ইপিজেড-বন্দর-বারেকবিল্ডিং-চৌমুহনী হয়ে দেওয়ানহাট রেলসেতুর পশ্চিম পাশ দিয়ে পাহাড় ঘেঁষে টাইগার পাস মোড়ের পর মূল সড়কের ওপর দিয়ে লালখান বাজার মোড় পেরিয়ে ওয়াসার মোড়ে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে গিয়ে মিলছে।

সর্বশেষ খবর