২৭ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৪:৩৩

চুলের যত্নে স্পা

সাদিয়া সারা

চুলের যত্নে স্পা

প্রতীকী ছবি

সারা দিনের ব্যস্ততায় ত্বকের যত্ন নেওয়া সম্ভব হলেও চুলের যত্ন ওই তেল আর শ্যাম্পু অবধিই। যত্নের ঘরে যতই শূন্য হোক না কেন, মাথায় ঘন চুলের চাহিদা সব রমণীর কাছেই এক। চুলের যত্নে হেয়ার স্পার জুড়ি নেই। 

হেয়ার স্পা করার পদ্ধতি :

বাড়িতে হেয়ার করার কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। খুব সহজ এবং ঝামেলাবিহীন। কয়েকটা পদ্ধতিতে অবলম্বন করলেই যথেষ্ট। এজন্য বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই। ম্যাসাজের তেল, হোয়ালে, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ও হেয়ার মাস্ক। বাজারের পণ্য না ব্যবহার করে বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারেন এই হেয়ার ট্রিটমেন্ট। চুল পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে এবং কেমিক্যালের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেও মুক্তি পাবেন।

►  শুরু করেন মাথার স্ক্যাল্প ম্যাসাজ দিয়ে। অলিভ, আমন্ড, নারিকেল, তিল বা আমলকী তেল ব্যবহার করে আঙ্গুলের সাহায্যে হালকা ম্যাসাজ করুন। এতে স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকবে। অন্তত ১০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এরপর পুরো স্ক্যাল্পে তোয়ালে জড়িয়ে নিন। ঘাড়ের ওপরের অংশ ঢাকতে ভুলবেন না। ১০ মিনিট রেখে দিন। সব ধাপ করার সময় না পেলেও সপ্তাহে অন্তত একবার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করতে পারেন। চুল ভালো থাকবে।

►  স্ক্যাল্পে তেল ম্যাসাজ করার পর স্টিম নিন। গরম পানিতে তোয়ালে ডুবিয়ে পানি নিংড়ে চুলে জড়িয়ে রাখুন। এতে তেল স্ক্যাল্পের গভীরে পৌঁছায়। ফলে রুক্ষতা কমে এবং আর্দ্রতাও ঠিক থাকে। ১৫-২০ মিনিট এভাবে চুল স্টিম করুন। তোয়ালে ঠাণ্ডা হলে আবার গরম করে জড়িয়ে রাখুন।

►  এবার চুল ধোয়ার পালা। মাইন্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিন। অতিরিক্ত কেমিক্যালযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না। এতে ময়েশ্চার নষ্ট হয়ে চুল শুষ্ক হয়ে যায় এবং ডগা ডাঙার সমস্যাও দেখা দেয়। কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। বেশি গরম পানি ব্যবহার করবেন না।

►  এবার কন্ডিশনিংয়ের পালা। খেয়াল রাখুন যাতে চুলে পর্যাপ্ত পানি থাকে। খুব শুকনো চুলেও যেমন কন্ডিশনিং করা উচিত নয়, তেমনই চুলে খুব বেশি পানি থাকলেও মুশকিল। চুলের ধরন বা সমস্যা বুঝে কন্ডিশনার ব্যববহার করতে পারেন। চুল ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। বাজার থেকে কেনা কন্ডিশনার তো ব্যবহার করেই থাকেন। হেয়ার স্পায়ের দিনগুলোয় বাড়িতে বানানো ভিনেগার মিশিয়ে চুলে লাগান। পাঁচ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করুন :

► শসা শুষ্ক এবং ড্যামেজড চুলের জন্য খুব ভালো। একটা ডিমের সাদা, দুই চা চামচ অলিভ অয়েল এবং চার টুকরো শসা একসঙ্গে পেস্ট করে চুলে লাগিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

►আধাকাপ গ্রিন টি-এর সঙ্গে ১ চামচ লেবুর রস এবং ২ চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

►  এটি হেয়ার স্পায়ের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। যাবতীয় পুষ্টি কিন্তু এই ধাপেই চুলে পৌঁছবে। এবার হেয়ার মাস্ক লাগানোর পালা। তবে সবক্ষেত্রে যে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহারের পরই মাস্ক লাগাবেন, তা নয়। উপাদান এবং ধরন অনুযায়ী মাস্ক আগে বা পরে লাগাতেই পারেন। বাজারের তৈরি মাস্ক ছাড়াও বাড়িতে বানিয়ে নিতে পারেন পারফেক্ট হেয়ার মাস্ক।
 

পরফেস্ট হেয়ার মাস্ক :

► হেয়ার গ্রোথ এবং শাইনের জন্য অ্যাভোকাডোতে প্রচুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি রয়েছে যা চুলের জন্যও খুব উপকারী। ভঙ্গুর চুলের জন্যও অ্যাভোকাডো খুব ভালো। দুটো বড় অ্যাভোকাডো চটকে সঙ্গে এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। আঙ্গুলের সাহায্যে ধীরে ধীরে চুলের জট ছড়িয়ে এই মিশ্রণ চুলে লাগান। স্ক্যাল্প থেকে চুলের ডগা পর্যন্ত লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

►  ডিম প্রোটিনের ভালো উৎস। চুল মজবুত করার জন্য ডিমের বিকল্প নেই। তবে একটা কথা মাথায় রাখবেন, ডিম ব্যবহার করলে, চুল কখনো গরম পানিতে ধোবেন না। ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুল ধুলে ডিমের গন্ধও চলে যায়। একটা ডিমের সঙ্গে ২-৩ টেবিল চামচ নারিকেল তেল মিশিয়ে চুলে লাগান। ভালো হয় যদি তেল ম্যাসাজের পর পরই মিশ্রণটি লাগিয়ে গরম তোয়ালে জড়িয়ে রাখেন। ২০ মিনিট বাদে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

► স্ট্রবেরি খেতে যেমন উপাদেয়, তেমনই গুণেও ভরপুর। চুলের জন্যও খুব ভালো। এক কাপ স্ট্রবেরি, একটা ডিমের কুসুম চুলকে পুষ্টি দিতে সপ্তাহে একবার হেয়ার মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। 

► এক টেবিল চামচ মধু এক গ্লাস দুধে মিশিয়ে নিন। পুরো চুলে এবং স্ক্যাল্পে এই মিশ্রণ লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। ১৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। চুল নরম এবং চকচকে হবে।
 

হেয়ার স্পা শুধু চুলের জন্য উপকারীই নয়, লাইফস্টাইল, কাজের চাপের কারণে হওয়া স্ট্রেস রিলিফে বেস্ট অপশন।

চুল পড়া, রুক্ষতা, নির্জীব চুল, খুশকি ইত্যাদি এক নিমেষেই গায়েব করার জন্য হেয়ার স্পা দারুণ। পার্লারে গিয়ে অনেকেই হেয়ার স্পা করলেও সময়ের অভাবে তা করাতে অনেকেই নারাজ। বাড়িতেই সেরে নিতে পারেন এই হেয়ার ট্রিটমেন্ট।

► চুলকে কন্ডিশন করতে হেয়ার স্পা উপকারী। চুলের গোড়াও মজবুত হয় এবং চুলের গ্রোথও ভালো হয়।

► খুশকির সমস্যা দূর করতে মাসে অন্তত দুবার হেয়ার স্পা করান। খুশকির কারণে চুল পড়ার সমস্যা থাকলে, তাও কমে যাবে।

►  হেয়ার স্পা করলে চুলের গোড়া শক্ত হয়। ফলে ঘন এবং স্বাস্থ্যোজ্জল চুল পেতে হেয়ার স্পা করুন।

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর