২ মার্চ, ২০২৪ ১৯:২৩
আনতালিয়া ফোরাম

জলবায়ু পরিবর্তনে স্থানচ্যুতদের জাতিসংঘের ‌‘অভিবাসী’ সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্তির আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

অনলাইন ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তনে স্থানচ্যুতদের জাতিসংঘের ‌‘অভিবাসী’ সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্তির আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

আজ শনিবার তুরস্কের পর্যটন নগরী আনতালিয়ায় স্থানীয় সময় দুপুরে ‘আনতালিয়া ডিপ্লোম্যাটিক ফোরাম-২০২৪’ এর এক প্যানেল আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের কারণে মানুষের স্থানান্তর এখন এতো প্রকট বাস্তব যে বাংলাদেশ অবিলম্বে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ‘জলবায়ু অভিবাসী’ ও ‘শরণার্থী’র সংজ্ঞা পরিবর্তন করে জাতিসংঘের অভিবাসী ও শরণার্থীদের সংজ্ঞার সাথে সংগতিপূর্ণ করার আহ্বান জানাচ্ছে।” 

আজ শনিবার তুরস্কের পর্যটন নগরী আনতালিয়ায় স্থানীয় সময় দুপুরে ‘আনতালিয়া ডিপ্লোম্যাটিক ফোরাম-২০২৪’ এর ‘বিল্ডিং এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওনাল আর্কিটেকচারস : দ্য চ্যালেঞ্জ অব আনম্যাচিং ইন্টারেস্টস’ শীর্ষক প্রথম প্যানেল আলোচনায় বক্তৃতাকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

আন্তুর্জাতিকবিষয়ক বিশেষজ্ঞ লরেন্স অ্যান্ডারসনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।

পরিবেশবিদ ড. হাছান মাহমুদ বলেন, অনেক ছোট ও দ্বীপরাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশও জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি গত ৩ দশক ধরে বিশেষত গ্রিনহাউস গ্যাসের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের সমগ্র উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এবং এসব ঘটনা প্রতিনিয়ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক জায়গায় জলবায়ু অভিবাসনের বৃদ্ধি ঘটাচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক পরিবেশ বিজ্ঞানী বহু বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের বিষয়ে আলোকপাত করে আসছেন। এখন অনেক বিশ্বনেতাসহ সকলের কাছেই এটি স্পষ্ট যে, কোনো দেশের স্থানীয় সমস্যাও বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলে। তবুও ধনী দেশগুলো, যারা বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য প্রধানত দায়ী, তারা এ সমস্যা মোকাবিলা করতে এবং আমাদের পরিবেশ রক্ষার জন্য খুব কমই করছে।’

‘বাংলাদেশ এই রূঢ় বাস্তবতার অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে ক্ষতিগ্রস্তদের ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে রক্ষার জন্য সমস্ত পরিবেশকর্মী ও বিশ্বনেতাদের কাছে জলবায়ু অভিবাসী ও শরণার্থীর সংজ্ঞা পরিবর্তনের গুরুত্ব মেনে নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা প্রণয়নের আহ্বান জানাচ্ছে’,- বলেন মন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ স্মরণ করিয়ে দেন, মহাবিশ্বের দুই ট্রিলিয়ন গ্যালাক্সির মধ্যে আমাদের জানামতে একমাত্র পৃথিবী গ্রহেই ‘প্রাণে’র বিকাশ ঘটেছে। সেই প্রাণের অস্তিত্ব রক্ষায় বিশ্বের পরিবেশ সুরক্ষা এবং এর ওপর বিরূপ প্রভাবগুলো প্রশমনে সযত্ন গুরুত্বদানের কোনো বিকল্প নেই।

সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক

এ দিন সাইডলাইনে সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইগন্যাসিও ক্যাসিসের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন ক্ষেত্রসহ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন তারা।

তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক, মন্ত্রীর একান্ত সচিব আরিফ নাজমুল হাসান, সুইজারল্যান্ডের আন্তুর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক পরিচালক রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল লুশিংগার ও সুইস পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উপদেষ্টা সেড্রিক স্টাকি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর