২০ মার্চ, ২০২৪ ১৮:৩৮

সরকার যদি না বোঝে মানুষ কষ্টে আছে, তাহলে সমাধান হবে কিভাবে : জিএম কাদের

অনলাইন প্রতিবেদক

সরকার যদি না বোঝে মানুষ কষ্টে আছে, তাহলে সমাধান হবে কিভাবে : জিএম কাদের

সংগৃহীত ছবি

বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, সরকারি হিসাবেই দেশের প্রায় ২৬ ভাগ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই বিশাল অংশ ধার করে খাবার ক্রয় করছে। খাদ্যদ্রব্য তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ১ থেকে দেড় কোটি পরিবার বা ৪ কোটি মানুষ এমন বাস্তবতায় মোকাবেলা করছে। যারা পরিবারভুক্ত নয় তারা এই হিসেবের বাইরে। তারা বছরে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা ঋণ করছে খাবার ক্রয় করতে। ঋণ না করলে তারা খাবার পাচ্ছে না। অমর্ত্য সেন বলেছিলেন, পণ্যের অভাবে দুর্ভিক্ষ হয় না, দুর্ভিক্ষ হয় ক্রয় ক্ষমতার অভাবে। 

তিনি বলেন, সরকারই স্বীকার করছে প্রায় ৪ কোটি মানুষের খাদ্যক্রয় ক্ষমতা নেই। দেশ এখন আংশিকভাবে দুর্ভিক্ষ আক্রান্ত। দেশে আংশিক ভাবে দুর্ভিক্ষ চলছে। যারা ধার পরিশোধ করতে পারে, তাদেরই মানুষ ধার দেয়। প্রায় চার কোটি মানুষ খাদ্য কিনতে ধার করছে কিন্তু হতদরিদ্ররা তো কারো কাছে ধার পায় না, তারা কী খেয়ে তিনবেলা খেতে পাচ্ছে? যারা কারো কাছে ধার পায় না এমন অন্তত আরও ১০ কোটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। সরকার বলে বেড়ায়, দেশে নাকি রুগ্ন মানুষ দেখা যায় না। এটা কী সত্য কথা? আমাদের বেশির ভাগ মানুষ অর্থ কষ্টে আছে। সরকার যদি না বোঝে দেশের মানুষ কষ্টে আছে তাহলে সমাধান হবে কিভাবে? মানুষ যখন মোটেও খাদ্য কিনতে পারবে না, না খেয়ে মারা যাবে- সে অবস্থা এখনো আসেনি। তবে, সে দিকেই তো দেশ যাচ্ছে। 

আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। 

এসময় তিনি আরও বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সকল কাজ জনগণের স্বার্থে করেছিলেন। জনগণও সব সময় পল্লীবন্ধুকে নন্দিত করে রেখেছিলেন। এরশাদকে দেখলে পঙ্গপালের মত মানুষ ছুটে আসতেন। আমরা সঠিকভাবে রাজনীতি করে পল্লীবন্ধুর স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। যেখানে অন্যায়, অবিচার, বিভেদ থাকবে না। এরশাদ সাহেব সুশাসন দিতে সমর্থ্য হয়েছিলেন। 

এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, যদি কোন দল তাদের নীতি আদর্শ নিয়ে রাজনীতিতে টিকতে না পারলে সামনের দিকে অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। অস্বাভাবিক রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তাই স্বাভাবিক রাজনীতি চলতে দেয়া সরকারের দায়িত্ব। বিরোধীদলকে কাজ করতে দেয়া সরকারেরই দায়িত্ব। আমরা পল্লীবন্ধুর নির্দেশিত পথে চলে নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি। 

এসময় বিরোীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, যারা বলছেন, জাতীয় পার্টি ভেঙে যাচ্ছে- তারা ভুল বলছেন। জাতীয় পার্টি ভেঙে যাচ্ছে না। রাজনীতি হচ্ছে একটি চলন্ত ট্রেনের মত। চলার পথে কেউ নেমে যাবে আবার কেউ নতুন করে উঠবে, এভাবেই রাজনীতি চলছে। আমরা গুটি কয়েক লোক চলে গেলেও জাতীয় পার্টির ক্ষতি হবে না, জাতীয় পার্টি এগিয়ে যাবে নিজস্ব গতিতে। জাতীয় পার্টিতে নতুন প্রজন্ম যোগ দেবে। আমরা তাদের সাথে নিয়ে পল্লীবন্ধুর রাজনীতি এগিয়ে নেবো। 

এর আগে দোআ মুনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ক্বারী ইসারুহুল্লাহ আসিফ। 

সকালে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপির নেতৃত্বে কাকরাইলস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে পল্লীবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন নেতা-কর্মীরা। সকাল থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কোরআন তেলাওয়াত ও বিকালে জাতীয় পার্টি মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক জহিরুল আলম রুবেলের সভাপতিত্বে দো’আ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি’র সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজুর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, অ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সুলতান আহমেদ সেলিম, যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, কৃষক পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন, জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম খান প্রমুখ। 

আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম আব্দুল মান্নান, মেজর অব. রানা সোহেল, মোস্তফা আল মাহমুদ, শেরীফা কাদের, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা খলিলুর রহমান খলিল, ইঞ্জিনিয়ার মনির আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আমির উদ্দিন আহমেদ ডালু, জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব সামছুল হক, সম্পাদক মন্ডলী হুমায়ন খান, আনোয়ার হোসেন তোতা, কাজী আবুল খায়ের, সুলতান মাহমুদ, এমএ রাজ্জাক খান, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, আজহারুল ইসলাম সরকার, জাকির হোসেন মৃধা, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, দ্বীন ইসলাম শেখ, হাফেজ ইসাহুরুল্লাহ আসিফ, শাহজাহান কবির, শহীদ হোসেন সেন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা, সামছুল হুদা, আলমগীর হোসেন, একেএম নুরুজ্জামান খান, লোকমান হোসেন ভ‚ইয়া রাজু। জাতীয় সৈনিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, জাতীয় ছাত্র সমাজ এর সভাপতি আল মামুন, মোটর শ্রমিক পার্টির সভাপতি মেহেদী হাসান শিপন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম প্রমুখ। 

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর