১৯ মে, ২০১৭ ০৩:১৯

রাজপ্রাসাদের নিচ থেকে হাজার বছরের কঙ্কাল উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক

রাজপ্রাসাদের নিচ থেকে হাজার বছরের কঙ্কাল উদ্ধার

সংগৃহীত ছবি

দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাস সম্পর্কে অনেক রহস্য রয়েছে, যার সত্য উদঘাটন আজও সম্ভব হয়নি। শোনা যায়, এক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজপরিবারে নাকি পুণ্যার্জনের জন্য নরবলি দেওয়ার রীতিও প্রচলিত ছিল। সে সমস্ত রীতির কোনও প্রমাণ অবশ্য মেলেনি এখনও। কিন্তু অন্য একটি ঐতিহাসিক রীতির জ্বলন্ত প্রমাণ হাতে এসেছে বিশেষজ্ঞদের কাছে। 

সিলা রাজবংশের বাসস্থান চন্দ্র কেল্লায় ঐতিহাসিক অনুসন্ধানের ফলে উদ্ধার হয়েছে দু’টি কঙ্কাল, যার নেপথ্যে এক হাড় হিম করা সত্য নিহিত রয়েছে বলে অনুমান করছেন ঐতিহাসিকরা। 

দক্ষিণ কোরিয়ায় সিলা রাজবংশ ৬৬৮ থেকে ৯৩৫ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করে। গেয়ংজু প্রদেশের অন্তর্গত ভোলোসং এলাকায় ছিল এই রাজবংশের রাজধানী। সেখানেই গড়ে উঠেছিল চ‌ন্দ্র কেল্লা— সিলা রাজাদের পারিবারিক বাসস্থান। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাস সম্পর্কে নতুন তথ্য পাওয়ার আশায় চন্দ্র কেল্লায় খননকার্য শুরু করেন সে দেশের প্রত্নতাত্ত্বিকরা। সেই সময়েই দু’টি কঙ্কাল উঠে আসে। গবেষকদের দাবি, কঙ্কাল দু’টি প্রায় হাজার বছরের পুরনো। কিন্তু কাদের কঙ্কাল দু’টির পরিচয় সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা এক বিস্ময়কর তথ্য দিয়েছেন।
 
প্রাচীন দক্ষিণ কোরিয়ায় এক অদ্ভুত রীতি প্রচলিত ছিল। সে দেশে যখন কোনও রাজার মৃত্যু হতো, তখন তার ব্যক্তিগত পরিচারককে সেই রাজার সঙ্গেই কবর দিয়ে দেওয়া হতো। মনে করা হতো, এই রীতি অনুসরণ করলে রাজবাড়ির ‘চাকর’ মৃত্যুর পরেও রাজার সেবা করতে পারবেন, এবং পরলোকে রাজার কোনও কষ্ট হবে না। গবেষকদের দাবি, যে দু’টি কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে, সেগুলি কোনও রাজার ব্যক্তিগত দুই পরিচারকেরই। 

কিন্তু রাজপ্রাসাদের নীচেই বা তাদের কবর দেওয়া হলো কেন এমন প্রশ্নের জবাবে গবেষকরা বলছেন, প্রাচীন দক্ষিণ কোরিয়ায় এমনটাও বিশ্বাস করা হতো যে, কোনও বাড়ি বা প্রাসাদের ভিত খোঁড়ার সময়ে কোনও জীবন্ত মানুষকে সেখানে কবর দিতে পারলে, বাড়ির নির্মাণ নির্বিঘ্ন হয়। এই দু’টি মানুষকেও চন্দ্র প্রাসাদের ভিত খোঁড়ার সময়েই জীবন্ত কবর দেওয়া হয় বলে দাবি। প্রাসাদের ভিত খোঁড়ার সময়েই রাজবংশীয় কোনও সদস্যের মৃত্যু হয়। তারই দুই পরিচারককে তখন চন্দ্র প্রাসাদের নীচে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়। অর্থাৎ কার্যত দুই রীতিই অনুসৃত হয় এই কাজের মধ্য দিয়ে। 

গবেষকরা আরও বলছেন যে, ওই দুই পরিচারককে কোনও মাদক খাইয়ে প্রথমে অজ্ঞান করে দেওয়া হয়। তার পর তাদের ফেলে দেওয়া হয় ভিতের জন্য খোঁড়া গর্তের ভিতরে। সেই কারণেই কঙ্কাল দু’টিতে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। 

 


বিডি প্রতিদিন/ ১৭ মে, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-৬

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর