২২ জানুয়ারি, ২০২৪ ০৯:১৮

নারী-মদ-অর্থবিত্ত ফেলে যে ইংলিশ ফুটবলার এখন ধর্মযাজক!

অনলাইন ডেস্ক

নারী-মদ-অর্থবিত্ত ফেলে যে ইংলিশ ফুটবলার এখন ধর্মযাজক!

ফিলিপ মুরলিন। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিপ মুলরিন, ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক ফুটবলার। এই ক্লাবেই বয়সভিত্তিক দল দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। যদিও প্রিমিয়ার লিগে ইউনাইটেডের হয়ে একটির বেশি ম্যাচ খেলা হয়নি তার। এরপর পাড়ি দেন নরউইচ সিটিতে। সেখানেই ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা কাটান মুরলিন। নরউইচের হয়ে দীর্ঘ ছয় বছর প্রিমিয়ার লিগে খেলেন ১৬১ ম্যাচ। সেখানে তার বার্ষিক বেতন ছিল ৫ লাখ পাউন্ড। এছাড়া জাতীয় দল নর্দান আয়ারল্যান্ডের হয়েও মুলরিন খেলেছেন ২৭ ম্যাচ।

শুধু খেলা নয়, নামজাদা মডেলদের সঙ্গে সম্পর্কের কারণেও আলোচনায় ছিলেন মুলরিন।

কিন্তু ক্যারিয়ারের ছন্দপতন ঘটে ২০০৫ সালে যখন নরউইচ ছেড়ে কার্ডিফ সিটিতে চলে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত ২০০৮ সালে ফুটবলকেই বিদায় জানান এই মিডফিল্ডার।

ফুটবল ছেড়ে মুরলিন হেঁটেছেন একটু ভিন্ন পথে। অন্য খেলোয়াড়দের মতো কোচ, ধারাভাষ্যকার কিংবা বিশ্লেষকের দায়িত্ব বেছে নেননি তিনি।

চাকচিক্য ও অর্থবিত্তের জীবন ছেড়ে পুরোদস্তুর ধর্মপ্রচারক বনে যান মুরলিন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে ক্যাথলিক গির্জায় যাজক হিসেবেও দায়িত্ব পান সাবেক এই ফুটবলার।

জানা গেছে, যখন মুলরিনের বয়স ৩১, তখন থেকেই ফুটবলের প্রতি ভালবাসা হারাতে শুরু করেন তিনি। সেই সময়ই তিনি ঝুঁকে পড়েন ধর্ম ও অধ্যাত্মবাদের দিকে। ওই সময় পারফম্যান্স ও ক্যারিয়ারের প্রতি মনোযোগ দিতে পারছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত নিজের জীবনধারাই বদলে ফেলেন এই ফুটবলার।

এক সাক্ষাৎকারে মুলরিন বলেন, “কোন মুহূর্তে এটা ঘটেছিল, সেটা আলাদা করে বলা কঠিন। আমি বলব, এটা আমার নরউইচে থাকার সময় শেষ বছরে শুরু হয়েছিল। যদিও স্পষ্টভাবে নয় এবং আমি এটা নিয়ে তেমন ভাবছিলামও না। তবে নিজের জীবনধারা নিয়ে আমি অসন্তুষ্টিতে ভুগছিলাম।”

হঠাৎ কেন এমন পরিবর্তন? মুলরিন এ বিষয়ে জানান, “ফুটবলার হিসেবে আমাদের জীবনটা দারুণ। এক্ষেত্রে আমি অনেক সৌভাগ্যবানও। কিন্তু সবকিছুর পরও জীবনে একধরনের শূন্যতা ছিল। আমি কেন সুখী নই, এটা ভেবে কিছুটা স্তব্ধ ছিলাম। অথচ একজন তরুণ হিসেবে আমার কাছে সবকিছুই ছিল। এসব চিন্তাই আমাকে বদলে দেয়। পরিচালিত করে বিশ্বাস ফিরে পাওয়ার দিকে। বিশ্বাসটা আরও অল্প বয়সেও আমার মধ্যে উঁকি দিয়েছিল। তখন আমি এক বছরের জন্য বাড়ি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। আর সে বছরই সবকিছু বদলে যেতে শুরু করে।”

মুরলিন বলেন, “পরবর্তীতে আমি আবার নিয়মিতভাবে প্রার্থনা করতে শুরু করি। এর মধ্য দিয়ে আমি পূর্ণতার একটা স্বাদ পেতে শুরু করি। ফুটবলে চূড়ায় উত্থান এবং তলানিতে পতন— দুটিই থাকে। কিন্তু এই প্রার্থনা আমাকে একধরনের স্থিরতার অনুভূতি এনে দেয়।”

একপর্যায়ে পুরোপুরিই ধর্মে মনোনিবেশ করেন সাবেক এই ‘রেড ডেভিল’ তারকা। নিজের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে ৪৬ বছর বয়সী সাবেক এই ফুটবলারের কোনও আক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, “এই জীবনধারার প্রতি আমি তীব্র আকাঙ্ক্ষা বোধ করি এবং কয়েক মাস এটা নিয়েই থাকি। এরপরই আমি এটা নিয়ে আরও অন্বেষেণের সাহস পাই এবং পুরোপুরিভাবে এ পথে আসার সিদ্ধান্ত নিই।”

তবে বদলে যাওয়া মানুষটির ফুটবল ক্যারিয়ার একেবারে বির্তকমুক্ত ছিল না। ২০০৫ সালে একবার মদ খেয়ে কারফিউ ভাঙায় তাকে নর্দান আয়ারল্যান্ডের স্কোয়াড থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া মডেল নিকোলা চাপম্যানের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়েও আলোচনায় এসেছিলেন মুলরিন। এর মধ্যে ২০১৬ সালে বেলফাস্ট হাই কোর্ট সাবেক এই মিডফিল্ডারকে দেউলিয়াও ঘোষণা করে।

তবে এসব এখন শুধুই অতীত। ফিলিপ মুরলিন এখন পুরোপুরি আত্মাধিক জীবনযাপন করেন। বদলে যাওয়া জীবনে একাগ্রচিত্তে ধর্মযাজকের কাজটাই করছেন তিনি। সূত্র: ডেইলি মেইল

বিডি প্রতিদিন/আজাদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর