১ এপ্রিল, ২০২৪ ১০:১৭

দশম শ্রেণির ছাত্র বানালো তিনতলা জাহাজ!

এম. আবু সিদ্দিক, চরফ্যাশন (ভোলা) থেকে

দশম শ্রেণির ছাত্র বানালো তিনতলা জাহাজ!

নিজের বানানো জাহাজের সাথে স্কুলছাত্র নয়ন। (ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন।)

প্রযুক্তির বদৌলতে তিনতলা জাহাজ বানিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ভোলার চরফ্যাশনের দশম শ্রেণির ছাত্র নয়ন। ক্ষুদে এই বিজ্ঞানী নিজের উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে আগামিতে আরও অভিনব প্রযুক্তির উদ্ভাবন করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে বিভোর। 

নয়নের তৈরি তিনতলা জাহাজের প্রতি তলায় রঙ-বেরঙ লাইটিংয়ের সাহায্যে বৈচিত্র্যময় করা হয়েছে। অত্যাধুনিক রাডার এবং ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে জাহাজটি চালাতে এনালগ সিস্টেমের মতো হলেও  রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যেই চলছে এই  জাহাজ। মূলত এটি এটি জাহাজের আদলে একটি “ডেমো” জাহাজ। প্রাথমিকভাবে এই জাহাজ চালু করা হয়েছে চরফ্যাশনের একটি পুকুরে। বরিশাল-ঢাকাগামী কীর্তনখোলা জাহাজের আদলে একই রকম ডিজাইনে এই জাহাজ তৈরি করেছে হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান স্কুলছাত্র নয়ন। 

নয়নের উদ্ভাবিত "ডেমো" জাহাজ এক নজর দেখার জন্য নয়নের বাড়িতে উৎসুক মানুষের ভীড়। ক্ষুদে শিক্ষার্থীর বিস্ময়কর আবিষ্কার দেখতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ছোট বড় সবাই ছুটছেন তার বাড়িতে। এমন উদ্ভাবনে বিস্মিত গ্রামের সবাই। নয়নের প্রতিভার সঠিক বিকাশের জন্য আশু পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান চরফ্যাশনবাসীর। 

নয়নের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,  দীর্ঘ ১০ মাসের প্রচেষ্টায় রিমোট কন্ট্রোলের এই “ডেমো” জাহাজ তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ক্ষুদে বিজ্ঞানী নয়ন। “ডেমো” জাহাজ আবিস্কারক নয়নের বাড়ি ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানাধীন চরমানিকা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। চর আইচা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র নয়ন। হতদরিদ্র ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন ফরাজীর জ্যেষ্ঠ সন্তান। চার ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার বড়।

"ডেমো" জাহাজটি চালাতে নয়ন নিজেই তৈরি করেছে একটি শক্তিশালী  রিমোট কন্ট্রোল। জাহাজে লাগানো হয়েছে শক্তিশালী ২টি মোটর। ১২ ভোল্টেজ একটি ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে জাহাজে । মোটর দু'টির সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে দুইটি পাখা। যার মাধ্যমে সামনে-পেছনে চালানো যাচ্ছে। তিনতলা এই ডেমো জাহাজের বিভিন্ন তলায় নানান রংয়ের আলোকসজ্জা। অন্ধকারে চালানোর জন্য সামনে রয়েছে হেড লাইট।

নয়ন বলেন, জীবনে একজন বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন আমার। লেখাপড়ার পাশাপাশি আরও কিছু বানানোর চেষ্টা আছে। স্কুলে টিফিনের জন্য বাবা-মায়ের কাছ থেকে জমানো টাকা দিয়ে ককসিট, প্লাস্টিকের পাইপ, কাগজ, মোটর, ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক তার, রিমোট কন্ট্রোলার, পাখা সংগ্রহ করি। পড়ালেখার পাশাপাশি ১০ মাসের প্রচেষ্টায় কীর্তনখোলা জাহাজের আদলে ৭ ফুট দৈর্ঘ্য ৩ ফুট প্রস্থের এই জাহাজ বানিয়েছি। আমার উদ্ভাবিত প্রযুক্তি নির্ভর জাহাজটি কীর্তনখোলা-১০ জাহাজ কোম্পানির  মালিককে উপহার দিতে চাই। এই উপহার গ্রহণ করলে আমার স্বপ্ন স্বার্থক হবে।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর