৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১৫:১৪

‌‘ভ্যাম্পায়ার ফেশিয়াল’ থেকে এইচআইভি সংক্রমণ, খুললো রহস্যের জট

অনলাইন ডেস্ক

‌‘ভ্যাম্পায়ার ফেশিয়াল’ থেকে এইচআইভি সংক্রমণ, খুললো রহস্যের জট

‘ভ্যাম্পায়ার ফেশিয়াল’ করার পর কয়েকজন নারী এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছেন এমন প্রতিবেদন সামনে আসার পর কিছু প্রসাধন বা রূপচর্চার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 

মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্য মতে, ২০১৮ সালে দেশটির নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের একটি স্পা সেন্টারে কমপক্ষে তিনজন নারী এইচআইভিতে সংক্রমিত হয়েছিলেন। 

সিডিসির দেয়া তথ্য মতে, এই নারীরা প্রথম কসমেটিক পদ্ধতি নেওয়ার পর এইচআইভিতে সংক্রমিত হয়েছেন বলে মনে করা হয়। ‘ভ্যাম্পায়ার ফেশিয়াল’-এর মাধ্যমে কীভাবে এই নারীরা এইচআইভি আক্রান্ত হলেন উঠছে সেই প্রশ্ন।

ভ্যাম্পায়ার ফেশিয়াল হলো প্লাটিলেট রিচ প্লাজমা (পিআরপি) ফেশিয়াল। এ পদ্ধতিতে রোগীর রক্ত নেওয়া হয়। একটি সেন্ট্রিফিউজ ব্যবহার করে রক্ত থেকে প্লাটিলেট রিচ প্লাজমা আলাদা করা হয়। এরপর ছোট সুইয়ের মাধ্যমে মুখমণ্ডলে ইনজেকশন দিয়ে প্লাজমা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।

পদ্ধতিটি নতুন কোলাজেন ও ইলাস্টিন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে। ত্বকের সবচেয়ে বাইরের স্তর মেরামত করতে সাহায্য করে। যা বলিরেখা ও ব্রণের দাগ কমাতে পারে।

২০১৮ সালের গ্রীষ্মে সিডিসি এক মার্কিন নারীর বিষয়ে তথ্য পায়। তার বয়স ৪০ থেকে ৫০ বছর। তিনি বিদেশে থাকাকালে এইচআইভি পরীক্ষা করেছিলেন। পরীক্ষায় তার পজেটিভ আসে। অর্থাৎ, তিনি সংক্রমিত। এই নারী উল্লেখ করেন, ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক নেওয়ার কোনো ইতিহাস তার নেই। সম্প্রতি রক্ত ​​​​সঞ্চালনের কোনো ইতিহাস নেই তার। তা ছাড়া তিনি তার বর্তমান সঙ্গী ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে সম্প্রতি যৌনসঙ্গম করেননি।

তবে এই নারী অবশ্য সে বছরের শুরুতে নিউ মেক্সিকোর একটি স্পা সেন্টারে ভ্যাম্পায়ার ফেশিয়াল করার কথা বলেছিলেন। স্পা সেন্টারটি নিয়ে তদন্ত করে সিডিসি। সেন্টারটি অন্যান্য ইনজেকশন পরিষেবাও দিয়ে থাকে। তদন্তে দেখা যায়, স্পা সেন্টারটির লাইসেন্স ছিল না। সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের চর্চা ছিল না।

যেমন রক্তের লেবেলবিহীন টিউব ও মেডিকেল ইনজেকশন রান্নাঘরের ফ্রিজে খাবারের পাশাপাশি সংরক্ষণ করা। আবার ড্রয়ার ও কাউন্টারে খোলা সিরিঞ্জ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা।

কিছু রক্তের শিশি পুনর্ব্যবহারের আলামতও দেখা গেছে। সিডিসি অন্তত একজন গ্রাহককে (ক্লায়েন্ট) চিহ্নিত করেছিল, যিনি এই স্পা সেন্টারে সেবা নিতে যাওয়ার আগে এইচআইভি পরীক্ষায় পজেটিভ শনাক্ত হয়েছিলেন।

মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থাটি তখন থেকে এইচআইভির পাঁচটি ঘটনার ক্ষেত্রে এই স্পা সেন্টারটির সংশ্লিষ্টতা নথিবদ্ধ করে। এর মধ্যে চারজন নারী, যারা ২০১৮ সালের মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই সেন্টারে ‘ভ্যাম্পায়ার ফেশিয়াল’ চিকিৎসা নিয়েছিলেন। অপর ব্যক্তি একজন পুরুষ। তিনি এই স্পা সেন্টারে ‘ভ্যাম্পায়ার ফেশিয়াল’ নেওয়া এক নারীর (চার নারীর মধ্যে একজন) সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্কে যুক্ত।

সিডিসি বলেছে, এই পুরুষ ও নারীর এইচআইভি সংক্রমণের শেষ পর্যায় ইঙ্গিত দেয়, ফেশিয়ালের আগেই এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তারা।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর