২৯ মে, ২০২৪ ১৩:২৭

পাখি হারিয়ে ব্যথিত মতিন সৈকত

মহিউদ্দিন মোল্লা,কুমিল্লা

পাখি হারিয়ে ব্যথিত মতিন সৈকত

মা, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারে ৫ সদস্য। তিন বছর আগে আরেকজন নতুন সদস্য যোগ হয়। তবে মানুষ নয়, শঙ্খ চিল। মতিন সৈকতের গত ৬টি ঈদ কেটেছে পরিবারের এই সদস্যদের সাথে।

তিনি জানান, ২০২১ সালের ঈদ-উল ফিতরের দিন তার পরিবারে আসে পাখিটি। তাদের সাথে থাকতো খেতো। 

 কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার আদমপুর গ্রামের মতিন সৈকত। পাখিটির দেখাশোনা করতেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মতিন সৈকতের মা শাহানারা বেগম পরপারে চলে যান। কয়েকদিন আগে পাখিটি হারিয়ে যায়।

দুই স্বজন হারিয়ে ব্যথিত মতিন সৈকত। মা ও প্রিয় পাখি হারিয়ে আগামী ঈদ নিরানন্দে কাটবে বলে জানান তিনি। 

 মতিন সৈকত বলেন,পাশের কুশিয়ারা গ্রামের কিশোর রাসেল পাখিটিকে এই বাড়িতে এনে রেখে যায়। তিনি পাখিটিকে প্রাণি সম্পদ অফিসে নিয়ে চিকিৎসা করান। তারপরেও তার একটি ডানা নষ্ট হয়ে যায়। সে উড়তে পারতো না। ছোট শঙ্খ চিলের তিন বছরে ছানা বড় হয়ে যায়। পাখিটি উড়তে পারতো না। এলাকায় এমন প্রাণি নেই, যে তাকে ধরে নিয়ে যাবে। তার ধারণা, কোনো মানুষ পাখিটি বাড়ির সামনে পেয়ে নিয়ে গেছে।

সকাল-বিকালে পাখিটিকে তিনি খাবার দিতেন। তাকে হারিয়ে তিনি স্বজন হারানোর বেদনা অনুভব করছেন।   

স্থানীয় সূত্র জানায়, দাউদকান্দি উপজেলার আদমপুর, পুটিয়াসহ আশপাশের গ্রামে প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ হচ্ছে। বাড়ি থেকে বের হলেই চোখে পড়ে মাছের খামারে ব্যবহার করা জালে কোনো পাখি বা গুঁইসাপ আটকা পড়েছে। মতিন সৈকত নেমে পড়েন সেটি উদ্ধার করতে। ২২ বছর ধরে তিনি এ কাজ করে আসছেন। এর মধ্যে ২০০০ পাখি উদ্ধারের পর অবমুক্ত করেন। এ ছাড়া বন বিড়াল, গুঁইসাপ, বেজি, শিয়ালসহ অনেক বন্যপ্রাণিকে অবমুক্ত করেছেন। মতিন সৈকত স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। এর পাশাপাশি তিনি মাছ চাষ ও নিরাপদ ফসল উৎপাদন নিয়ে কাজ করেন। 

ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন কুমিল্লার ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মীর ফজলে রাব্বী বলেন, প্রাণি, পাখি ও কৃষি প্রেমী মানুষ মতিন সৈকত। তার কাজগুলো দেখার সুযোগ হয়েছে। সমাজ ও পরিবেশ দরদি মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমছে। সেখানে মতিন সৈকত ব্যতিক্রম। 

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর