নাতালি দাউ ৫২ বছর বয়সেও দৌড়াতে পছন্দ করেন। তিনি মাত্র ১২ দিনে দৌড়েছেন এক হাজার কিলোমিটার পথ। থাইল্যান্ড থেকে শুরু করে সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়ায় দৌড়েছেন তিনি।
গেল ৫ জুন সিঙ্গাপুরের বাণিজ্যিক এলাকায় দৌড় শেষ করেন নাতালি। সাপ্তাহিক ছুটির দিন না হওয়া সত্ত্বেও ওই সময় কয়েক হাজার দৌড়বিদ তাকে অভিনন্দন জানাতে এসেছিলেন।
মালয়েশিয়ার পূর্ব উপকূলে থাকাকালে অডিও বার্তায় বিবিসিকে নাতালি বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। কিন্তু দৌড় শুরুর চার দিনের মাথায় আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছি, আমি কি আসলেই শেষ করতে পারব?’নাতালি একজন ‘আলট্রা-রানার’। যারা ম্যারাথনের দূরত্ব বা ৪২ দশমিক ২ কিলোমিটারের বেশি পথ দৌড়ান, তাদের আলট্রা-রানার বলা হয়। ১২ দিনে হাজার কিলোমিটারের লক্ষ্যে পৌঁছাতে প্রতিদিন ৮৪ কিলোমিটার দৌড়াতে হয়েছে নাতালিকে। এটা প্রতিদিন দুই ম্যারাথনের সমান দূরত্ব।
প্রতিদিন এতটা পথ দৌড়াতে গিয়ে নাতালির ত্বক রোদের তাপে পুড়ে গেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা টানা দৌড়াতে গিয়ে অবসন্ন হয়ে পড়তেন তিনি। একপর্যায়ে তিনি মূত্রনালির সংক্রমণেও ভুগেছেন। এতটা শারীরিক কষ্টের পরও দমানো যায়নি এই নারীকে।
বিবিসিকে নাতালি বলেন, ‘এত দীর্ঘ পথ দৌড়ানোর ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে সবচেয়ে বেশি ২০০ কিলোমিটার দৌড়েছিলাম। কিন্তু এবার নিজেকে ভিন্ন ধরনের একটি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলাম।’
অ্যাথলেট হিসেবে প্রশিক্ষণ নেননি নাতালি। বয়স যখন ত্রিশের কোটার শেষের দিকে, তখন দৌড়ানো শুরু করেছিলেন তিনি। সুস্থ থাকতে দৌড়ানোর পথ বেছে নেন তিনি।
এ বিষয়ে নাতালি বলেন, ‘দৌড়ে আপনি প্রথম হলেন, নাকি সবার শেষে দৌড় শেষ করলেন, সেটা কোনো বিষয় নয়; বরং আপনি অতিমানবীয় একটি কাজ শেষ করেছেন। বিশ্বের শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ মানুষ কখনো এমন কাজটি করতে পারবে না।’
এতটা পথ নাতালির দৌড়ানোর অন্যতম কারণ ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীদের উৎসাহ জোগাতে অর্থ সংগ্রহ করা। তিনি মোট ৩৭ হাজার ডলারের দাতব্য তহবিল সংগ্রহ করেছেন। নাতালি বলেন, ‘লোকজন দান করুক আর না করুক, তাদের কাছে একটা বার্তা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।’
নিজের বয়স প্রসঙ্গে নাতালি বলেন, ‘একজন বয়স্ক নারী হিসেবে মানুষের কাছে এটা প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম যে চাইলে আপনি নিজেকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেন।’
সূত্র : বিবিসি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত