৩০ আগস্ট, ২০২৪ ১৮:৪৭

বন্যার পর আতঙ্ক, গুজরাটে বাড়িতে ঢুকে পড়ছে কুমির

অনলাইন ডেস্ক

বন্যার পর আতঙ্ক, গুজরাটে বাড়িতে ঢুকে পড়ছে কুমির

রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে কুমির! একটি নয়, একাধিক। কারও মুখে মরা জীবজন্তু, তো কেউ খাবারের খোঁজে হন্য হয়ে এ দিক-ও দিক ঘুরে বেড়াচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতির পাশাপাশি কুমিরের আতঙ্কেও ভুগছে গুজরাটের বরোদা। গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে গুজরাটে। তিন দিনে সেই রাজ্য থেকে মোট ৩৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। 

গত রবিবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির জেরে গুজরাটে বিশ্বামিত্রিসহ বেশ কয়েকটি নদী বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। নদীর জল ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। পাশাপাশি বিশ্বামিত্রি নদী থেকে একাধিক কুমিরও ঢুকে পড়েছে জনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলিতে। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ জনগণের মধ্যে।

বিশ্বামিত্রি নদী বরোদা শহরের মাঝ বরাবর বয়ে গিয়েছে। প্রবল বৃষ্টির কারণে বর্তমানে নদীর জল বিপদসীমার ৯ ফুট ওপর দিয়ে বইছে। এর ফলে নদীর জল ঢুকে পড়েছে বরোদা এবং আশপাশের নিচু এলাকাগুলিতে। সেই জলের সঙ্গেই ঢুকেছে নদীর অনেক কুমিরও।

বরোদা শহর এবং আশপাশের লোকালয়ে কুমির ঘুরে বেড়ানোর বেশ কয়েকটি ভিডিও ইতোমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে সমাজমাধ্যমে। এর মধ্যে একটি ভিডিওর দেখা গিয়েছে, মুখে মরা কুকুর নিয়ে বরোদার রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি কুমির। আবার একটি কুমির ভেসে যাওয়া একটি নিচু বাড়ির ছাদে উঠে পড়েছে। বরোদা এবং আশেপাশের এলাকায় বসবাসকারী তিন হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যারা রয়ে গেছেন, তারা প্লাবনের পাশাপাশি কুমিরের আতঙ্কেও তটস্থ। প্লাবিত এলাকাগুলিতে বসবাসকারী বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, কুমিরের ভয়ে ঘরের ভিতরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিতে গুজরাটের বিস্তীর্ণ অংশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ১৮ হাজার মানুষকে। তবে প্রশাসনের চিন্তা এবং উদ্বেগ বাড়িয়ে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারও গুজরাটের ১১টি জেলায় ভারী বৃষ্টি হবে। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, সৌরাষ্ট্র এবং কচ্ছ এলাকার উপরে একটি গভীর নিম্নচাপ অবস্থান করছে। সেটি ক্রমশ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোচ্ছে। এই নিম্নচাপের কারণেই গুজরাতে প্রবল বর্ষণ হচ্ছে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা। বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দেবভূমি দ্বারকা, জামনগর, রাজকোট এবং পোরবন্দর জেলায়। শুধু দেবভূমি দ্বারকা জেলাতেই ১৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। জলমগ্ন এলাকাগুলি থেকে বাসিন্দাদের উদ্ধার করতে যৌথ ভাবে অভিযান চালাচ্ছে সেনা এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল।

বুধবারই গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেলকে ফোন করে সে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি এবং ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ নিয়ে খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রের তরফে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয় গুজরাট সরকারকে। বৃহস্পতিবার সৌরাষ্ট্র এবং কচ্ছ এলাকার জেলাগুলিতে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে গুজরাতের অন্য জেলাগুলিতেও।


বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর