সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) রান্নার তেলের ‘স্মোক পয়েন্ট’ বা ধোঁয়া ওঠার তাপমাত্রা সম্পর্কে অধিকাংশ বাসিন্দাই জানেন না। এক জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৫৫ শতাংশ মানুষ জানেন না কোন তেল উচ্চ তাপে রান্নার জন্য নিরাপদ। অথচ এই অজ্ঞানতা অনেক বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি ডেকে আনছে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা।
স্মোক পয়েন্ট হলো এমন একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা, যেখানে তেল থেকে ধোঁয়া উঠতে শুরু করে এবং তেল ভেঙে ক্ষতিকর যৌগ তৈরি করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত গরম হলে অনেক তেল থেকে অ্যাক্রোলিন নামক একটি রাসায়নিক বের হয়, যা শ্বাসতন্ত্রে জ্বালা ও দীর্ঘমেয়াদি রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
দুবাই লন্ডন হাসপাতালের ডায়েটিশিয়ান ডা. দানা আল-হামউই বলেন, স্মোক পয়েন্ট সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। ভুল তেলে ভাজাভুজি করলে শরীরে ফ্রি রেডিক্যাল তৈরি হয়, যা প্রদাহ, হজমে সমস্যা এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণ হতে পারে।
আন্তর্জাতিক মডার্ন হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ স্বপ্না ম্যারি জন বলেন, অ্যাক্রোলিন এক ধরনের বিষাক্ত গ্যাস, যা শ্বাসকষ্ট, কাশি ও গলা ব্যথার কারণ হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে এর সংস্পর্শে থাকলে হৃদরোগ ও ক্যানসারের আশঙ্কাও বাড়ে।
উচ্চ তাপে রান্নার জন্য অ্যাভোকাডো তেল, পরিশোধিত অলিভ অয়েল, ঘি বা চিনাবাদাম তেল ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে, ফ্ল্যাক্সসিড বা আনরিফাইন্ড অলিভ অয়েল কম তাপে ব্যবহার উপযোগী। এছাড়া, তেল কখনোই বারবার ব্যবহার করা উচিত নয়। তেল পুড়ে গেলে কিংবা পোড়া গন্ধ পেলে তা পরিত্যাগ করা উচিত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শুধু ঘর নয়, রেস্টুরেন্টের বাবুর্চিদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি। তেলের বোতলে সহজ ভাষায় লেবেল, স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রম এবং কমিউনিটি সেন্টারে প্রচারাভিযান চালাতে হবে। রান্নাঘরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা, থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা পরিমাপ এবং উপযুক্ত সংরক্ষণ পদ্ধতি অনুসরণ করলেই তেলের ক্ষতিকর প্রভাব কমানো সম্ভব। এই ছোট পরিবর্তনগুলোই পরিবারকে সুস্থ রাখতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল