শিরোনাম
বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪ ০০:০০ টা

আমদানি বিপর্যয়ে এক হাজার ৭৮৪ কোটি টাকার রাজস্ব হাতছাড়া

আমদানি বিপর্যয়ে এক হাজার ৭৮৪ কোটি টাকার রাজস্ব হাতছাড়া

দেশে আমদানি বাণিজ্য বিপর্যয়ের কারণে বিদায়ী ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এক হাজার ৭৮৪ কোটি টাকার রাজস্ব হাতছাড়া হয়েছে চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটের। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুরবস্থা, শিল্প-কারখানার উৎপাদনে ধস ও সক্ষমতা কমায় রাজস্ব আদায়ে এমন বিপর্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম ভ্যাট। অতি সম্প্রতি গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম রাজস্ব আদায় হওয়ায় এ সংক্রান্ত ব্যাখ্যা দিয়ে একটি প্রতিবেদন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) প্রেরণ করেন চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কার্যালয়ের কমিশনার মো. জামাল হোসেন।

তিনি বলেন, গত অর্থবছরে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের ওপর কঠোর মনিটরিং করেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ছয় হাজার ৭৮৯ কোটি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে পাঁচ হাজার ৪ কোটি টাকা আয় করেছে চট্টগ্রাম ভ্যাট। বাকি এক হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা আমদানি বিপর্যয়ের কারণে হাতছাড়া হয়েছে চট্টগ্রাম ভ্যাটের। বিপুল পরিমাণের এই অর্থ না আদায় হওয়ার জন্য সুউচ্চ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতাকেও দায়ী করেছে চট্টগ্রাম ভ্যাট। গত অর্থবছরকে অস্বাভাবিক বছর আখ্যায়িত করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্টোবর থেকে জানুয়ারি এই চার মাস বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ঢাকা-চট্টগ্রামের সড়ক-মহাসড়ক অবরুদ্ধ থাকায় বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল সংগ্রহ এবং উৎপাদিত পণ্য সরবরাহ প্রায় বন্ধ ছিল। এর ফলে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো কাঁচামাল সংগ্রহের অভাবে সক্ষমতা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদনে যেমন ব্যর্থ হয়েছে, তেমনি আবার যেটুকু পণ্য উৎপাদিত হয়েছে, সেগুলো বাজারজাতকরণ সম্ভব হয়নি। এসব কারখানাতেই পড়েছিল। ফলে সব ধরনের সেবা ও পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো রাজস্ব প্রদানের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। এর প্রভাব গত অর্থবছরের শেষ দিকে আরও বেশি পড়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কার্যালয়ের ওই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর খাত অ্যাডভান্স ট্রেড ভ্যাট (এটিভি) থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৫৫ কোটি টাকার রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। জ্বালানি তেল খাতের বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) পরিচালিত ইস্টার্ন রিফাইনারি থেকে এক হাজার ৯০ কোটি টাকা রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। চা আমদানি খাত থেকে ৭৮ কোটি টাকা ভ্যাট কম আদায় হয়েছে। স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি কমে যাওয়াতে ২৫ কোটি টাকার ভ্যাট কম আদায় হয়েছে। সিগারেট খাতে চট্টগ্রামের দুটি প্রতিষ্ঠান শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বন্ধ হওয়ায় ২০ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় সম্ভব হয়নি। সিমেন্ট শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত ক্লিংকার আমদানি কমে যাওয়ায় ১৭ কোটি টাকার ভ্যাট কম আদায় হয়েছে।

 

 

সর্বশেষ খবর